× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

তবে সুখের কান্নাই হোক এবার

নেয়ামত উল্লাহ

প্রকাশ : ২৮ আগস্ট ২০২৩ ০৯:৩৪ এএম

আপডেট : ২৮ আগস্ট ২০২৩ ১১:২৪ এএম

তবে সুখের কান্নাই হোক এবার

সীমানা দড়ির এপারে মাশরাফি বিন মর্তুজা দাঁড়িয়ে ছিলেন অপেক্ষায় ‘এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন’ বাংলাদেশকে বরণ করে নিতে। কিন্তু সে অপেক্ষা শেষ হলো হতাশায়, মাশরাফি আর দাঁড়িয়ে থাকার শক্তিটা জোগাড় করতে পারলেন না, বসেই পড়লেন। দল যে এশিয়া কাপের ফাইনালে হেরে গেছে ২ রানে!

২০১২ সালের ২২ মার্চ ‘আইকনিক’ দৃশ্য শুধু ওই একটাই নয়, এরপর ট্র্যাজিক হিরো সাকিব আল হাসানকে জড়িয়ে ধরে মুশফিকুর রহিমের কান্না, তার পেছনে অশ্রুসিক্ত এনামুল হক বিজয়, নাসির হোসেনদের প্রতিচ্ছবি বাংলাদেশ ক্রিকেটের বিয়োগান্ত ইতিহাসের বইয়ে প্রচ্ছদই হয়ে গেছে রীতিমতো।

সে ছবিটা বদলে দেওয়ার সুযোগ এসেছিল পরে। তাও একবার নয়, দুবার। ২০১৬-তে ঘরের মাঠে ফরম্যাট বদলে গেল, কিন্তু ফাইনালের দৃশ্যটা বদলাল না, বাংলাদেশ রয়ে গেল ওই বিজিত দলেই। দুই বছর পর আমিরাতের মাটিতে আরও একবার সেই একই দৃশ্যের অবতারণা, মিলল হাতছোঁয়া দূরত্বে গিয়ে ওই শূন্য হাতে ফেরার বেদনা। তাই ২০১২ সালের মাশরাফি, সাকিব, মুশফিকদের ওই হতাশ-অশ্রুসিক্ত ছবিগুলোই হয়ে আছে দেশের ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠ আইকনিক দৃশ্য।

দুয়ারে দাঁড়িয়ে আরও এক এশিয়া কাপ। ঠিক এই সময়ে এসে সেসব ফাইনালের অবতারণা করাটা খুবই যৌক্তিক। এশিয়া কাপ তো বটেই, ত্রয়োধিক দেশ নিয়ে বহুজাতিক টুর্নামেন্টে যে ওই তিনটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সাফল্য!

২০১২ সালের সেই আসরে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো ফাইনালে খেলেছিল যখন, সেই টুর্নামেন্ট শুরুর আগে স্বাগতিকরা ফাইনালে খেলবে, অমন কিছু ভাবতে পেরেছিলেন কজন? প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে যখন বাংলাদেশ হারল ৫ উইকেট হাতে রেখেও ৪১ বলে ৪০ রান তুলতে না পারার ব্যর্থতায়, তখন তো মনে হচ্ছিল, এই বুঝি মোক্ষম সুযোগটা হাতছাড়া হয়ে গেল একমাত্র ম্যাচ জেতার!

২০১৬ সালের আসরে বাংলাদেশকে সমীহের চোখে দেখা হচ্ছিল বটে, কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ফাইনালে চলে যাবে দল, এমন কিছু অভাবনীয়ই ছিল। ২০১৮ আসরেও দৃশ্যটা ছিল একই। 

দৃশ্যটা এবারও খুব একটা বদলায়নি। তবে এবার বাংলাদেশের পক্ষে কথা বলছে পরিসংখ্যান। ওয়ানডে সুপার লিগ থেকে উতরে গিয়ে এশিয়ার চারটি দল এবার সরাসরি খেলছে বিশ্বকাপে। সে দলগুলোর মধ্যে সবার ওপরে থাকা দলটার নাম বাংলাদেশ। 

এমন কিছু যে ঝড়েবকে হয়নি, তার প্রমাণটাও দিচ্ছে আরও একটা পরিসংখ্যানই। ২০১৯ বিশ্বকাপের পর থেকে সেরা স্পিন আক্রমণ বাংলাদেশের। ৪৫ ম্যাচে বাংলাদেশি স্পিনারদের শিকার ১৪৬ উইকেট; গড়টাও চোখে পড়ার মতো, মাত্র ২৭.৩! পেসাররা সমান ম্যাচে তুলেছেন ১৮৯ উইকেট, গড় স্পিনারদের চেয়ে একটু ‘খারাপ’, প্রতি উইকেট তুলতে পেসারদের খরচ করতে হয়েছে ২৮.৩৩ রান। শেষ বিশ্বকাপের পর থেকে দ্বিতীয় সেরা পেস আক্রমণ এটাই। দুটো পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, পেস আর স্পিন দুই বিভাগই সমানতালে চলতে পারেÑ এমন গুণ আছে একটা দলেরই, সেটা বাংলাদেশের। ব্যাটিংটা নিয়ে একটু দুশ্চিন্তা রয়ে গেছে, নির্ভরতার অভাবটা আছে বেশ। তবে বেশ কিছু ম্যাচে দলের ব্যাটিং আভাস দিয়েছে ভালো কিছুরই। 

এসব রসদ নিয়েই গতকাল বাংলাদেশ দল ঢাকা ছেড়েছে এশিয়া কাপের জন্য। যাওয়ার আগে তাসকিন আহমেদ বলে গেলেন, সবাই জ্বলে উঠলে চ্যাম্পিয়ন হওয়া খুব সম্ভব। তার আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে সাকিব আল হাসান সরাসরি চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অভিপ্রায় মুখে প্রকাশ না করলেও বলেছিলেন সবগুলো ম্যাচ জিততে চান। আর সেটা তো শুধুমাত্র অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হলেই সম্ভব!

বছরের শুরুতে সাকিব আল হাসান নিজেই জানিয়েছিলেন, ইতিহাসের সেরা বছরটা অপেক্ষা করছে বাংলাদেশের সামনে। সেটা প্রমাণের মঞ্চটা কিন্তু সামনেই। স্রেফ শিরোপাটা জিতলেই তার কথাটা যথার্থতা পাবে। 

তবে তার আগে পূর্বশর্ত হচ্ছে ফাইনাল খেলা। সেটা হলে এবার ফাইনাল খেললে বাংলাদেশ আর খালি হাতে ফিরবে না, বিশ্বাস নির্বাচক হাবিবুল বাশারের। তার কথা, ‘আমরা এর আগে তিনবার ফাইনাল খেলেছি, চ্যাম্পিয়ন হতে পারিনি। এবার যদি ফাইনালে যেতে পারে বাংলাদেশ, যা বেশ চ্যালেঞ্জেরই হবে। কারণ, শেষ কয়েক বছর ধরে অন্য দলগুলো কিন্তু অনেক এগিয়েছে। শ্রীলঙ্কা ভালো দল, আফগানিস্তানও অনেক এগিয়েছে, ভারত আছে, পাকিস্তান আছে তো ফাইনালে খেলতে হলে আমাদের অনেক লম্বা হার্ডল পেরোতে হবে। কিন্তু এবার যদি সে বাধাটা পেরিয়ে ফাইনালে যেতে পারি, তাহলে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হবে, আমরা এশিয়া কাপ নিয়েই বাসায় ফিরব।’ 

তবে তাই হোক। এশিয়া কাপ জিতে সুখের কান্নাই হোক। সাকিবদের ওই কান্নার ছবির তো অনেক দিন হয়ে গেল! এবারও কান্নাই থাকুক, শুধু আবহটা বদলে যাক, এবার যাত্রাটা শেষ হোক আনন্দ-অশ্রুতে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা