প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২২:৫৩ পিএম
আপডেট : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০০:৩৩ এএম
শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ে লক্ষ্য ছিল ২৯২। রীতিমতো চ্যালেঞ্জিং। বিশেষ করে ৩৭.১ ওভারের জন্য তো বটেই। সুযোগ ছিল আরও একটি। ৩৭.৪ ওভারে ২৯৫ তুলতে হতো। শ্রীলঙ্কার ছুঁড়ে দেওয়া এমন ওভার সীমায় টার্গেটে পৌঁছানো হিমালয়ের চূড়া স্পর্শ করার মতোই ছিল কঠিন কাজ। আফগানিস্তান ভালোই করে জানত মিশনটা এক রকম ‘অসম্ভব’। কিন্তু তারপরও সেই অসম্ভবকে সম্ভব করতে আপ্রাণ চেষ্টা করে গেছে আফগানরা। তাদের স্বপ্ন সারথি হয়ে লড়াই করে গেছেন মোহাম্মদ নবি ও হাশমাতুল্লাহ শহিদি। দুজনের ঝড়ো ইনিংসে সুপার ফোরে উঠার সম্ভাবনাটা জড়াল হয়েছিল। ৩৮তম ওভারের প্রথম বলে দরকার ছিল ৩ রান। এবার আউট হন মুজিব উর রহমান। পরে একই ওভারের চতুর্থ বলে ৬ রান নিলেও হতো। কিন্তু ফজলহক ফারুকি নিজের উইকেট সঁপে দেন ধনাঞ্জয়ার কাছে। দল হয় অলআউট। যে কারণে কোনো সমীকরণই মেলাতে পারেননি রশিদ খানরা। আর তাতে জমজমাট ও নাটকীয় ম্যাচে ২ রানে জিতে শেষ হাসি হাসে শ্রীলঙ্কা। আফগানদের স্বপ্ন গুঁড়িয়ে সুপার ফোরে নিজেদের নামও লেখে তারা।
আরও পড়ুন : ৩৭.১ ওভারেই ২৯২ রান দরকার আফগানদের
মোহাম্মদ নবি ফিরে যাওয়ার আগে ৩২ বলে এনে দেন ৬৫ রানের দুরন্ত এক ইনিংস। ৬ বাউন্ডারি ও ৫ ছক্কার এ ইনিংসে হয়েছে একটি রেকর্ডও। ফিফটি ছুঁয়েছেন নবি ২৪ বলে। একদিনের ক্রিকেটে আফগানিস্তানের হয়ে এটি দ্রুততম হাফ-সেঞ্চুরির রেকর্ড। শহিদি খেলেন অধিনায়কোচিত দুর্বার এক ইনিংস। ৬৬ বলে ৩ বাউন্ডারি ও এক ছক্কায় উপহার দেন তিনি ৫৯ রানের দাপুটে এক স্কোর।
ব্যাটিং ঝলক দেখান রহমত শাহও। তবে পাঁচ রানের জন্য ফিফটি মিস করেন। ৪০ বলে ৫ বাউন্ডারি ও এক ছক্কায় দলীয় সংগ্রহে যোগ করেন ৪৫ রান। আর করিম জানাতের ব্যাট থেকে আসে ২২ রান। ৩৭.৪ ওভারে সবগুলো উইকেট হারিয়ে ২৮৯ রান তুলে আফগানিস্তান। লঙ্কানদের হয়ে কাসুন রাজিথা একাই শিকার করেন ৪ উইকেট। দুটি করে উইকেট নেন দুনিথ ওয়েলাগে ও ধানাঞ্জয়া ডি সিলভা।
এশিয়া কাপে ‘বি’ গ্রুপের শেষ ম্যাচে টসে জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরু পায় শ্রীলঙ্কা। কোনো উইকেট না হারিয়েই পাওয়ার প্লে শেষ করে লঙ্কানদের দুই ওপেনার দিমুথ কারুণারত্নে ও পাথুম নিশাঙ্কা। পাওয়ার প্লেতে সংগ্রহ দাঁড় করায় ৬২ রান। পাওয়ার প্লের পরপরই অবশ্য দুই উইকেট খোয়ায় দলটি। গুলবাদিনের বলে ক্যাচ দিয়ে ৩২ রানে সাজঘরে ফিরেছেন দিমুথ করুণারত্নে।
কুশল মেন্ডিস মাঠের লড়াইয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে করেন দুর্বার ব্যাটিং। কিন্তু দুর্ভাগ্য সেঞ্চুরির দেখা পাননি। সাজঘরে ফেরেন নার্ভাস নাইনটিতে। ব্যক্তিগত ৯২ রানে রশিদ খানের হাতে বাজে এক রান আউটের শিকার হন। ৮৪ বলের দুরন্ত ইনিংসটি সাজান এ লঙ্কান ক্রিকেটার ৬ বাউন্ডারি ও ৩ ছক্কায়।
ম্যাচসেরা কুশল মেন্ডিসের দুরন্ত ব্যাটিংয়ের ওপর ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৯১ রানের পুঁজি গড়ে শ্রীলঙ্কা। চারিথ আসালাঙ্কা ৩৬ রানের সঙ্গে ওপেনার পাথুম নিসানকা ৪১ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন। শেষ দিকে ৩৩* রানে অপরাজিত থেকে যান দুনিথ ওয়েলাগে। তার সঙ্গে মহেশ ঠিকশানা তোলেন ২৮ রান। এতেই লঙ্কানদের সংগ্রহটা বেড়ে যায়।
আফগানদের হয়ে পেস তোপ দাগান গুলবাদিন নাইব। তার সঙ্গে রশিদ খান দুটি আর মুজিব উর রহমান উইকেট পান একটি।