প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১২:১৪ পিএম
আপডেট : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৪:৩২ পিএম
‘আমি ফুটবলকে ভালোবাসি’- তার ফেসবুক প্রোফাইলে গেলেই ইন্ট্রোয় লেখাটা চোখে পড়ে। দেশের ফুটবলে তিনি মাঠ দাপিয়ে বেড়িয়েছেন প্রায় দুই যুগ। খেলোয়াড়ি জীবনে বিপ্লব ভট্টাচার্য্য ছিলেন দেশের অন্যতম সেরা গোলরক্ষক।
আরও পড়ুন : বিশ্বকাপের শুরুতে থাকবেন না নাসিম!
এরপর ফুটবলকে ভালোবেসেই যোগ দিয়েছিলেন কোচিং পেশায়। তবে সময়ের ফেরে সে পথটা রুদ্ধ হয়ে এসেছে তার। হতাশা থেকে তাই এখন দেশ ছাড়ার ভাবনাও মগজে খেলে যাচ্ছে বাংলাদেশের সাবেক এই গোলরক্ষকের।
গতকাল সকালের দিকে তার ফেসবুক পাতায় জানান তার হতাশার কথা। এরপর তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমার যোগ্যতা অনুযায়ী যখন আমি কাজ করতে পারব না, সে পথগুলো বন্ধ হয়ে আসবে, তখন হতাশ হওয়াটাই স্বাভাবিক।’
জাতীয় দলের জার্সিতে ১৯৯৭ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত খেলে গেছেন। এ সময় টানা আট সাফে খেলেছেন তিনি। দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ দুই অর্জন- ১৯৯৯ এসএ গেমসের সোনা জয় আর ২০০৩ সাফ জয়; দুটোরই দলে ছিলেন তিনি।
তার এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতেই ২০২১ সালের শুরুতে তাকে কোচিং প্যানেলে যোগ করে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। জাতীয় দলের পাশাপাশি বাফুফের অনূর্ধ্ব-২৩ দলেরও গোলরক্ষক কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। প্রতিভা অন্বেষণের কাজটাও সামলেছেন ভালোভাবেই।
সেখানে দুই বছর কাজ করে গেল ঘরোয়া ফুটবল মৌসুমের শুরুতে তিনি যোগ দেন শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবে। এক মৌসুম পর তিনি ফিরতে চেয়েছিলেন ফেডারেশনে। তবে সেখানে তার পথটা রুদ্ধ করে রেখেছে ‘কিছু মানুষ’।
বিপ্লবের কথা, ‘কিছু মানুষ চায় না আমি কাজ করি। আমি ফুটবলে ছিলাম ২৪ বছর, জাতীয় দলে খেলেছি ১৬ বছর। এরপর সার্টিফিকেট নিয়েছি, অভিজ্ঞতাও অর্জন করেছি। এরপর যখন কাজের সুযোগ আসবে না, তখন বিষয়টা কষ্টদায়ক হয়ে দাঁড়ায়। বুফনের মতো গোলরক্ষকদের খেলা ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় দলের দুয়ার খুলে যায়। এটা একটা ফর্মালিটি, একটা ম্যানার, খেলোয়াড়দের সম্মান দেওয়া। এত বছর খেলার পরও যদি সম্মানই না পাই…’
তিনি জানান, বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন ভাই তাকে চাইছেন, কিন্তু বাফুফে-সংশ্লিষ্ট বাকিরা তার পথ আগলে দাঁড়িয়েছেন।
তার ভাষ্য, ‘শেখ জামালে যোগ দিয়েছিলাম মূলত জাতীয় দলে থাকার সময় পরিবারকে সময় দিতে পারছিলাম না সে কারণে। তখন সালাউদ্দিন ভাই বলেছিলেন, ‘তুমি যাচ্ছো, কিন্তু তোমার জন্য বাফুফের দরজা সব সময় খোলা।’
তিনি এখনও চাইছেন। কিন্তু তার আশপাশেও তো অনেকে আছেন, তারা চাইছেন না আমি কাজ করি।
নতুন ঘরোয়া মৌসুম শুরু হয়ে যাচ্ছে। এখনও কোনো ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত হননি তিনি। এদিকে ব্যস্ত সময় পার করা বাফুফেও তাকে আর টানছে না কোচিংয়ে। মূলত এ কারণেই তিনি এখন দেশ ছেড়েই চলে যেতে চাইছেন।
বিপ্লব বলেন, ‘নিজের মাতৃভূমি ছাড়তে চাইনি কখনোই। ফুটবলকে ভালোবেসেছি, ফুটবলের সঙ্গেই থাকতে চেয়েছিলাম। কাজের জায়গাগুলোকে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে, কেউ নিজ থেকে কাজ দিচ্ছে না এখন, তখন তো সেখানে তোষামোদি করে কাজ নেওয়ার মানুষ আমি নই। সে জন্যই এই স্ট্যাটাসটা দেওয়া।’