× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

নির্বিষ বোলিং আর কত

প্রবা প্রতিবেদন

প্রকাশ : ২২ অক্টোবর ২০২৩ ১৯:৪২ পিএম

নির্বিষ বোলিং আর কত

স্বপ্নটা অনেক বড়। নিজেদের সামর্থ্যের তুলনা যেটা হিমালয়ের চেয়েও বিশাল। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলা সহজ কথা নয়। বাংলাদেশের পারফরম্যান্সের কারণেই শেষ চারের লক্ষ্যটাকে অলীক কল্পনার মতোই মনে হচ্ছে এখন। বৈশ্বিক আসর এখন মাঝ পথে। আর টাইগাররা যেন পড়ে গেছে মাঝ সাগরে। কোনো দিকেই যেন যেতে পারছেন না। জয়ের দেখা পাওয়া তো এখন সোনার হরিণ। যাকে শুধু কল্পনাই করা যায়। কিন্তু ছোঁয়া যায় না। প্রতিটি ম্যাচ শেষে ক্রিকেটার থেকে কোচ সবাই দেখছেন বাকি সব ম্যাচ জয়ের স্বপ্ন। কিন্তু মাঠের লড়াইয়ে এসে দেখা যাচ্ছে চিত্রনাট্য।

নিউজিল্যান্ডের কাছে হারের পর মুস্তাফিজুর রহমান মিক্সড জোনে গিয়ে শুনিয়েছিলেন আশার বাণী। বাকি ছয়টা ম্যাচ জেতা সম্ভব। ভারত ম্যাচের আগে প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেও শোনান একই সুর। কিন্তু বাস্তবে হজম করতে হলো হারের তেতো স্বাদ। ভারতের কাছে বিধ্বস্ত হওয়ার পর ডেপুটি ক্যাপ্টেন নাজমুল হোসেন শান্ত দিয়ে রেখেছেন আরেক ভবিষ্যদ্বাণী, ‘কেউ জানে না, চার-পাঁচটা ম্যাচ জিতলেও পারি।’ তাহলে ২৪ অক্টোবর দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচে ভাগ্য কী দাঁড়াবে? কেউ তো জানে না। তবে ভারত ম্যাচের চিত্রনাট্য পুনর্মঞ্চায়ন হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। মাঠের পারফরম্যান্সের ফিরিস্তি তো তেমনই আভাস দিচ্ছে।

পারফরম্যান্স না ভালো হচ্ছে ব্যাটিংয়ে। না ভালো হচ্ছে বোলিংয়ে। বর্তমান সময়ে যেখানে ৩০০ রানও নিরাপদ নয়। সেখানে ২৪৫ বা ২৫৬ মোটেই ভালো স্কোর নয়। আর ক্রিকেট মহাযজ্ঞের বেলায় তো এ নিয়ে কথা বলারই সুযোগ নেই। তারপরও সান্ত্বনার একটা জায়গা আছে ব্যাটিংয়ে। সেটা কোথায়? অন্তত প্রতি ম্যাচে লড়াই করার মতো বা মাঠে বেশ কিছুক্ষণ টিকে থাকার মতো পুঁজি তো করতে পারছেন টাইগাররা। সিনিয়ররা ব্যর্থ হলে জুনিয়ররা হাল ধরছেন ব্যাটিং লাইন-আপের। সেঞ্চুরি না এলেও ফিফটির দেখা তো মিলছে। যদিও বিশ্বকাপের মতো আসরে সেটা মোটেই পর্যাপ্ত নয়।

কিন্তু বাংলাদেশের বোলিংটা হচ্ছে একেবারেই পানসে। ধার নেই বললেই চলে। স্পিনাররা যা একটু উইকেট পাচ্ছেন। দেশের পেসারদের জন্য উইকেট দূর আকাশের চাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেন তাদের হাতে ধরাই দিতে চাচ্ছে উইকেট। যে পেসাররা বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশের অনেক সাফল্যের গল্পের কাণ্ডারি বনে গিয়েছিলেন, সেই তারা এখন চরমভাবে ব্যর্থ হচ্ছেন প্রোটিয়া পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ডের ছোঁয়ায়। তার জাদুর পরশ এখন যেন কোনো কাজেই আসছে না। তারা তোপ দাগানোটাই যেন ভুলেই গেছেন। তাসকিন আহমেদ-মুস্তাফিজুর রহমান-শরিফুল ইসলামরা লাইন, লেন্থ, সুইং, গতি, ইয়র্কারের ঝাঁজই যেন দেখাতে পারছেন না। এমন নির্বিষ আর ছন্নছাড়া বোলিংয়ে উইকেট আশা করাটাও দুরূহ ব্যাপার।

চেন্নাইয়ের স্পিন স্বর্গে সফল হলেন নিউজিল্যান্ডের পেসাররা। লকি ফার্গুসন, ট্রেন্ট বোল্ট, ম্যাট হেনরিদের সঙ্গে স্পিনার মিচেল স্যান্টনার আর গ্লেন ফিলিপসদের মিলিত আক্রমণে বাংলাদেশ হারায় ৯ উইকেট। আর তাতেই দলের সংগ্রহটাও ২৪৫ রানে আটকে যায়। বিপরীতে বাংলাদেশের বোলাররা পুরোপুরি ব্যর্থ। নিউজিল্যান্ড ২৪৮ রান তুলতে দিয়েছে মাত্র দুই উইকেট। দুটি উইকেট আবার ভাগ করে নিয়েছেন মুস্তাফিজ আর সাকিব আল হাসান।

ভারত ম্যাচের গল্পও একই। ২৫৬ রানের পুঁজি গড়তেই লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের ঘাম ঝরে গেছে। লিটন দাস (৬৬), তানজিদ হাসান তামিম (৫১), মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (৪৬*) ও মুশফিকুর রহিমের (৩৮) ব্যাটিংয়ের কল্যাণে। নইলে তো পড়তে হতো অল্প রানে গুটিয়ে যাওয়ার লজ্জায়। কিন্তু তারপরও দিতে হয়েছে ৮ উইকেট। বাংলাদেশের এই স্কোরটাই ভারত টপকে গেছে মাত্র ৩ উইকেটে; বিরাট কোহলি (১০৩), শুবমান গিল (৫৩) ও রোহিত শর্মাদের (৪৮) ব্যাটিং ঝলকে। ভারতের তিন পেসার জাসপ্রিত বুমরাহ, মোহাম্মদ সিরাজ ও শার্দুল ঠাকুর মিলে নেন পাঁচ উইকেট। আর বাংলাদেশের হাসান মাহমুদের উইকেট বলতে একটি। বাকি পেসাররা থেকে গেছেন শূন্য হাতে। আর স্পিনারদের মধ্যে মেহেদি হাসান মিরাজ পেয়েছেন অবশ্য দুটি উইকেট। কিন্তু কুলদীপ যাদব আর রবীন্দ্র জাদেজা স্পিন জাদুতে ফেলে দেন তিন উইকেট।

এমন খাপছাড়া আর বিশৃঙ্খল বোলিং দিয়ে কেবল প্রতিপক্ষকে রানই দেওয়া যায়। জয় আর উইকেট পাওয়া তো দূরের কথা। চিন্তা করাও কষ্ট। ম্যাচ জমিয়ে তোলাই অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। এমন এলোমেলো বোলিং চলতে থাকলে সেমির স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে। সত্যি হবে না কোনো দিন। এ কারণেই বোলার আরও অনেক কাজ করতে হবে। প্রতিপক্ষের ব্যাটারকে পড়ে নিয়ে তার দুর্বল দিক খুঁজে বের করে সাজাতে হবে বোলিং আক্রমণের কৌশল। খেলায় থাকতে হবে মনোযোগ। তবেই না ধরা দেবে সাফল্য। অন্যথায় হতাশাই সঙ্গী হতে থাকবে। হজম করতে হবে বিদ্রূপ আর খোঁচা। যেমনটা করেছেন ভারতের সাবেক ওপেনার বীরেন্দর শেবাগ, ‘আর এটা তো বাংলাদেশই, আমরা কি অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের কথা বলছি নাকি। ওদের কাছে প্রত্যাশাই এমন, সেখানেই ওরা থাকবে।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা