প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৪:৩৪ পিএম
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৪:৪০ পিএম
ডানেডিন রেলওয়ে স্টেশনে ওয়ানডে সিরিজ ট্রফি উন্মোচন শেষে ক্যামেরাবন্দি দুই অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও টম লাথাম - ছবি: নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট
নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টেস্ট জয়ের ইতিহাস তো পুরোনো। তবে সীমিত ওভারের সিরিজে জয়টা এখনও সোনার হরিণ। লাল বলের সেই অবিস্মরণীয় জয়ের সুখস্মৃতি এবারও সঙ্গী টাইগারদের। এবার সাদা বলের অধরা জয়টাও নিজেদের করে নিতে চান বাংলাদেশের ছেলেরা। ডানেডিনে ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে বেশ উজ্জীবিত লাল-সবুজ প্রতিনিধিরা। আগামীকাল ভোর ৪টায় মাঠে গড়াচ্ছে দুদলের প্রথম ওয়ানডে।
নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে খেলা হলেই মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টের মহাকাব্যিক জয় অনুপ্রেরণার অফুরন্ত উৎসব হিসেবে কাজ করে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের জন্য। এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথম ওয়ানডে জয়ের সুবর্ণ সুযোগ এখন টাইগারদের সামনে। এ মিশনে দেশের মাটিতে কিউইদের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট জয়ের স্মৃতি উৎসাহ জুগিয়ে যাচ্ছে নাজমুল হোসেন শান্তদের।
স্পিনস্বর্গ মিরপুরে জিততে পারলে তো সিরিজ জয়ের ইতিহাসই গড়ে ফেলত ক্যাপ্টেন শান্তর দল। তার ওপর একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে নিউজিল্যান্ড একাদশকে ২৬ রানে হারিয়ে যারপরনাই আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে এখন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যরা।
এখন পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ১৬টি ওয়ানডে খেলেছে বাংলাদেশ। জয় কিন্তু আকাশের চাঁদ হয়েই রয়ে গেছে। সবগুলো ম্যাচ হেরে ব্যর্থতার খোলসে আটকে আছেন দেশের ক্রিকেটাররা। সেটা অবশ্য কিউইদের মাঠে। তবে সব মিলিয়ে এক দিনের ক্রিকেটে লাল-সবুজ জার্সিধারীদের পারফরম্যান্স কিন্তু বেশ দারুণ। ৪২ ওয়ানডে খেলে বাংলাদেশ জয়ের গল্প লিখেছে ১০টিতে। বিপরীতে নিউজিল্যান্ড জয় পেয়েছে ৩১টিতে। বাকি একটি ম্যাচ হয়েছে পরিত্যক্ত।
বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশের মাটিতে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতে ব্ল্যাক ক্যাপস শিবির। তার আগে ৫০ ওভারের ক্রিকেটে দেশের মাঠে কিউইদের বিরুদ্ধে টানা ১৫ বছর অজেয় থাকার রেকর্ড গড়েছিলেন বাংলার দামাল ছেলেরা। কেননা ২০০৮ সালের পর প্রথমবারের মতো সিরিজ জয়ের স্বাদ নেয় নিউজিল্যান্ড।
এবার নিউজিল্যান্ডের ডেরায় হারের বৃত্ত ভাঙার মিশন লিটন-মিরাজদের। পুরোনো হতাশা ঝেড়ে ফেলতে চান টাইগাররা। দূর করতে চান ভারত বিশ্বকাপের ভরাডুবির সব দুঃখ-গ্লানিও। ঘুরে দাঁড়িয়ে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথম জয় ছিনিয়ে নিতে যেন তর সইছে না শান্তদের। দলে নেই সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, তাসকিন আহমেদ ও ইবাদত হোসেনের মতো তারকা ক্রিকেটাররা। তারপরও লক্ষ্যে পৌঁছতে দৃঢ়প্রত্যয়ী অতিথি দলটি।
বাংলাদেশ সব সময় স্পিনবান্ধব উইকেটে খেলতে অভ্যস্ত। স্লো উইকেটের সঙ্গে সখ্য এখনও দূর করতে পারেনি তারা। স্পোর্টিং উইকেটে খেলতে গেলেই নাস্তানাবুদ হতে হয় তাদের। নিউজিল্যান্ডের মাঠে সেই চ্যালেঞ্জটা নিতে হবে টাইগারদের। কিউই পেস তোপ সামাল দেওয়ার সঙ্গে বাধা হয়ে দাঁড়াবে স্বাগতিকদের কঠিন কন্ডিশন। সন্দেহ নেই প্রচণ্ড শীতল হাওয়াও শত্রু হয়ে মাঠে থাকবে।
কিছুদিন আগে টেস্ট সিরিজে নিউজিল্যান্ডকে হারাতে চেয়েছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। সিরিজ হয়তো জিততে পারেননি। সিরিজ ১-১-এ অমীমাংসিত থেকে যাওয়ায় দুদল ট্রফি করে ভাগাভাগি। এবার নিউজিল্যান্ডের মাটিতে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের সঙ্গে সমান ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজও জিততে চান শান্ত।
নিউজিল্যান্ডে গিয়ে এর আগে দেশের অন্য কোনো অধিনায়ক হয়তো এমনটা জোর দিয়ে বলতে পারেননি। ডানেডিন রেলওয়ে স্টেশনে ওয়ানডে সিরিজের ট্রফি উন্মোচন শেষে শান্ত বললেন তেমনটাই, ‘দল হিসেবে আমরা সিরিজ জিততে মুখিয়ে আছি।’
শান্ত বলছেন, এবারের সিরিজে ২০২২ সালের জানুয়ারির মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্ট জয় তাদের অনুপ্রেরণার উৎস, ‘আমাদের দলটা ভালো। গত বছর আমরা এখানে একটি টেস্ট জিতেছি। এবার ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ জেতা আমাদের লক্ষ্য। যদি জিততে পারি, দারুণ হবে।’
শান্তর আত্মবিশ্বাসের অন্য কারণও রয়েছে। আপৎকালীন কাপ্তানের ভাষ্য, ‘আমরা বেশিরভাগ খেলোয়াড়কেই চিনি। কয়েকজন অবশ্য নতুন। আমাদের কাছে তাদের ফুটেজ আছে। মিটিংয়ে সেসব দেখছি। আশা করছি, ভালো পরিকল্পনা সাজিয়েই মাঠে নামতে পারব।’