প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ০২:২৩ এএম
আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ০২:২৮ এএম
নিউজিল্যান্ডের ডানেডিন বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের বিজয় দিবস উদযাপন - ছবি: বিসিবি
এমনিতেই হাড় কাঁপানো শীত। তার ওপর হিমেল হাওয়া। ভেন্যু ডানেডিনের তাপমাত্রা ১২-১৪ ডিগ্রিতে ওঠানামা করছে। সবে গ্রীষ্ম আসছি আসছি করছে। গরমের আগমনীবার্তা যদি এমন হয় তাহলে পুরো শীতের মৌসুমে সিরিজ হলে না জানি কী হতো! হয়তো বরফ জমানো ঠান্ডাই কাবু করে দিত সবাইকে। ভাগ্যিস সেটা হয়নি। সান্ত্বনা এখন এটাই। সব মিলিয়ে নিউজিল্যান্ডের কঠিন এক কন্ডিশন।
তবে কিউইদের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে মাঠে নামার আগে মাঠের বাইরের শত্রু ঠান্ডাকে অজুহাত হিসেবে দেখছেন না নাজমুল হোসেন শান্ত। মাত্রাতিরিক্ত শীতল আবহাওয়া নিয়ে আলোচনাটা তাই এড়িয়ে যেতেই চাইলেন বাংলাদেশ ক্যাপ্টেন।
আজ সাংবাদিকদের মাধ্যমে দেশের ক্রিকেট অনুরাগীদের আশ্বস্ত করলেন ঠান্ডায় কোনো সমস্যা হবে না, ‘কন্ডিশন তো একটু ঠান্ডা। তবে আমার মনে হয়, এই অজুহাত আমরা কেউই দিতে চাই না। কারণ এর আগেও এখানে আমরা এসেছি। তো এ সম্পর্কে আমাদের ধারণা আছে। আশা করছি, কাল খুব বেশি সমস্যা হবে না।’
প্রশ্ন উঠেছিল একাদশের সমন্বয় নিয়ে। কেননা ডানেডিনের পেসিং উইকেট ও শীতল কন্ডিশনটা মাথায় রাখতেই হচ্ছে। তাহলে কেমন হবে একাদশ? এই ‘গোপনীয় বিষয়’ নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানালেন না শান্ত, ‘এখানে তো সাধারণত পেস বোলারদের বেশি সাহায্য থাকে। তবে এ বিষয়ে খুব বেশি তথ্য দিতে চাই না। দেওয়াটা উচিতও নয়। কারণ এটা খুবই গোপনীয় বিষয়। দলের কম্বিনেশনের ক্ষেত্রেও একই। কালকে যখন আমরা খেলাটা শুরু করব, তখনই দেখতে পারবেন।’
নিউজিল্যান্ডের মাটিতে এখনও ওয়ানডেতে জয়ের দেখা পায়নি বাংলাদেশ। ১৬টি ওয়ানডে খেলে সবগুলোতেই হার মেনেছে টাইগাররা। টি-টোয়েন্টিতেও দেশের ছেলেরা লিখেছে ব্যর্থতার গল্প। ৯ ম্যাচ খেলে জয়টা অধরাই রয়ে গেছে।
লাল-সবুজের কাপ্তান শান্ত অবশ্য অতীত রেকর্ড আর পরিসংখ্যান নিয়ে চিন্তাই করছেন না একদম, ‘এর আগে বাংলাদেশের কোনো টিম ভালো করতে পারেনি নিউজিল্যান্ডে, তবে কোনো না কোনো দলকে তো করতে হবে। আমার মনে হয়, এই দলটার সেই সামর্থ্য আছে। সবাই বিশ্বাস করে, এবার ভালো কিছু হবে ইনশাআল্লাহ। আমার মনে হয় না খেলোয়াড়রা এ বিষয়ে জানে। আমিও ব্যক্তিগতভাবে জানি না যে নিউজিল্যান্ড হারে নাই কখনও। অবশ্যই তো ওদের বিপক্ষে চ্যালেঞ্জিং। অস্বীকার করার কিছু নেই, হারে নাই যে কোনোদিন হারবে না এমনও না।’
বাংলাদেশ ওয়ানডে সিরিজে ব্ল্যাক ক্যাপসদের মোকাবিলা করবে অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের ছাড়াই। কেননা দলে নেই সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, তাসকিন আহমেদ, এবাদত হোসেনদের মতো তারকা ক্রিকেটাররা। অভিজ্ঞরা বিশ্রামে থাকায় সৌম্য সরকার, এনামুল হক বিজয়রা পেয়েছেন দলে ফেরার সুযোগ।
তাই স্কোয়াডে সৌম্যকে মনে করা হচ্ছে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিবের বিকল্প। এ নিয়ে শান্তর ভাষ্য, ‘আলাদা কোনো ক্রিকেটারকে নিয়ে কথা বলতে চাই না। সবাই গুরুত্বপূর্ণ। তবে সৌম্যর দায়িত্বটা গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাটিংয়ের সঙ্গে ওনার বোলিংটাও খুব জরুরি। যেহেতু সাকিব ভাই নেই, তাই (সৌম্যর) ব্যাটিংয়ের সঙ্গে বোলিংটাও গুরুত্বপূর্ণ। আমার মনে হয়, টিম ম্যানেজমেন্ট এই কথা চিন্তা করেই তাকে দলে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এর সঙ্গে অভিজ্ঞতাটা তো আছেই।’
সাকিব-তাসকিনদের মতো তারকা ক্রিকেটাররা দলে নেই। সব মিলিয়ে টাইগারদের জন্য চ্যালেঞ্জিং একটা সিরিজ। তাই আগেভাগেই নির্দিষ্ট কোনো রণকৌশল নিয়ে ভাবতে চান না শান্ত। নজর কেবল সাফল্যে। ম্যাচের দিন শুরু থেকে ভালো পারফরম্যান্স করে খেলার নিয়ন্ত্রণটা নিজেদের হাতে নিতে চান এ তরুণ কাপ্তান, ‘সবকিছু নির্ভর করছে আমরা কীভাবে ইনিংসটা শুরু করছি। সেটা ব্যাটিং হোক বা বোলিং। আগে থেকেই খুব বড় চিন্তা নেই আমাদের। গুরুত্বপূর্ণ হলো, আমরা কত ভালোভাবে ইনিংসটা শুরু করতে পারি। শুরুটা যদি ভালো হয়, মোমেন্টামটা ধরে রাখতে পারি যেন। তাহলে এমনিই একটা বড় স্কোর হবে।’
নিউজিল্যান্ডে বৃষ্টি আসার কোনো ঠিকঠিকানা নেই। যেকোনো সময় হানা দিয়ে বসতে পারে প্রকৃতি। তবে এ নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তা কাজ করছে না শান্তর মাথায়, ‘বৃষ্টিটা আসলে নিয়ন্ত্রণে নেই। কন্ডিশনও আসলে নিয়ন্ত্রণে নেই। তো এটা নিয়ে ভাবার আসলে সুযোগ নেই। আমার মনে হয় যেরকম কন্ডিশনই থাকবে, ক্রিকেটাররা সেটা মানিয়ে নিয়ে খেলবে। সবাই এটা নিয়ে প্রস্তুত। যেরকম অবস্থাই থাক।’
বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ডের ব্যাট-বলের লড়াই রবিবার ভোর ৪টা থেকে শুরু হতে যাচ্ছে। প্রথম ওয়ানডে হবে ডানেডিনে। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ওয়ানডে ২০ ও ২৩ ডিসেম্বর যথাক্রমে নেলসন ও নেপিয়ারে। বাংলাদেশ সময় ভোর ৪টায় প্রতিটি ম্যাচ শুরু হবে।
ওয়ানডের পর হবে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। তিনটি টি-টোয়েন্টি হবে যথাক্রমে ২৭, ২৯ ও ৩১ ডিসেম্বর। প্রথম ম্যাচটি নেপিয়ারে। পরের দুটি মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে। প্রথম দুই টি-টোয়েন্টি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে। শেষ ম্যাচ ভোর ৬টায়।