প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ২২:০৬ পিএম
নোভাক জোকোভিচ ও কোকো গফ
বয়স একেবারেই কম। মাত্র ১৯-এ পা দিয়েছেন। এখনও শৈশবের দুরন্তপনা ছুঁয়ে যায় কোকো গফকে। শুধু কোর্টের বাইরের জীবনেই নয়। কোর্টের লড়াইয়েই কম দুরন্ত নন মার্কিন এ তারকা। বয়সটাই তো এমন আর কী! কিন্তু প্রায়ই একটি ভুল করে ফেলেন। সেটা মনের অজান্তে। মাঝেমধ্যেই ভুলে যান তিনি যে এখনও একজন টিনএজার।
কী এমন বয়স! নিজের বয়সটাই নাকি মনে রাখতে পারেন না। ইউএস ওপেন চ্যাম্পিয়ন গফের ভাষ্য, ‘গত চার বছরে জীবনটা এতটাই উপভোগ করেছি যে, শুধু মনে হয় আমার বয়সটা ১৯ থেকে বেশি।’ টেনিস কোর্টের বাইরে ঠিক কতটা দুর্বার গফ। ভুলে যাওয়ার প্রবণতা তারই প্রমাণ।
কোর্টের ‘যুদ্ধে’ও কোনো অংশে কম যান না গফ। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে দিলেন তার দৃষ্টান্ত। চতুর্থ রাউন্ডে উপহার দিলেন দুর্দান্ত পারফরম্যান্স। প্রতিপক্ষ হিসেবে ম্যাগদালেনা ফ্রেচকে পেয়ে রীতিমতো তেতে ওঠেন। হাতের র্যাকেটকে ‘খোলা তলোয়ার’ বানিয়ে পোলিশ খেলোয়াড়ের সব শট কচুকাটা করেন গফ।
কোর্টের শত্রুকে উড়িয়ে দেন ৬-১ ও ৬-২ গেমে। দুর্দান্ত এ জয়ে টিকিট কেটেছেন বছরের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম আসরের কোয়ার্টার ফাইনালের। তাতে একটি রেকর্ডও গড়ে ফেলেছেন। ২০০৮ সালের পর সর্বকনিষ্ঠ নারী খেলোয়াড় হিসেবে নাম লিখেছেন মেলবোর্নের এ টুর্নামেন্টের শেষ আটে। সেমিতে ওঠার লড়াইয়ে গফের প্রতিপক্ষ এবার ইউক্রেনের মার্তা কোস্তুক।
ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন আরিনা সাবালেনকাও ছুটে চলেছেন। কিছুতেই যেন থামানো যাচ্ছে না তার জয়রথ। মার্কিন প্রতিপক্ষ আমান্দা আনিসিমোভাকে সরাসরি সেটে হারিয়ে দিয়েছেন খুব সহজেই। বেলারুশ তারকা হেসে-খেলে জয় ছিনিয়ে নেন ৬-৩ ও ৬-২ গেমে। কোয়ার্টার ফাইনালে সাবালেনকা লড়বেন নবম বাছাই বারবোরা ক্রেজচিকোভাকের বিরুদ্ধে।
শুরুতে পিছিয়ে পড়লেও চেক প্রজাতন্ত্রের এ তারকা ৪-৬, ৬-৩ ও ৬-২ গেমে মিরা আন্দ্রেভাকে ধরাশায়ী করে পৌঁছে গেছেন প্রি কোয়ার্টার ফাইনালে। মেলবোর্নে রুশ ষোড়শী আন্দ্রেভাকে অবাক করা অভিযাত্রা থামিয়ে দেন বারবোরা। কিন্তু সাবালেনকার কাছে এবার পেরে উঠলেন না।
২৫ বছরের সাবালেনকার সঙ্গে গ্র্যান্ড স্ল্যামের এ আসরেই দেখা হয়ে যেতে পারে গফের। তবে দুই তারকার মুখোমুখি লড়াই সম্ভব কেবল সেমিফাইনালে। সম্ভাবনাটা সত্যি হলে বেলারুশের সাবালেনকা পাবেন মধুর প্রতিশোধ নেওয়ার দারুণ এক সুযোগ। কারণ ইউএস ওপেনের ফাইনালে গফের কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলেন তিনি।
১৫ বছর বয়সে উইম্বলডনে পা রেখে টেনিস দুনিয়াকে চমকে দিয়ে চেনান নিজের জাত। তখনই ভবিষ্যৎ তারকা হিসেবেই সবাই তাকে দেখতে থাকেন। যার পূর্ণতা এনে দেন গফ নিউইয়র্কে ক্যারিয়ারের প্রথম মেজর ট্রফি মাথার ওপর উঁচিয়ে ধরে।
টিনএজার হিসেবে ক্যারিয়ারের শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেলছেন এখন গফ। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে তিনি এখন দ্বিতীয় ফেভারিট খেলোয়াড়। দ্বিতীয় বাছাই সাবালেনকার পরের অবস্থানটাই এখন তার।
পোল্যান্ডের আগনিয়েস্কা রাদওয়ানস্কার পর প্রথম নারী খেলোয়াড় হিসেবে মেলবোর্নের শেষ আটে উঠে গফ জানান, নিজের কাছে নিজেকে বয়স্ক মনে হয় তার, ‘অনেক সময় আমি আমার বয়সটা ভুলে যাই। জানি, আমি আর টিনএজার থাকছি না। ১৬, ১৭ বছরের অন্য মেয়েদের দিকে যখন তাকাই- যারা সবে উঠে আসছে, তারা নিজেদের অল্প বয়সটা অনুভব করে। কিন্তু নিজেকে বয়স্ক মনে হয়। আমি জানি, বয়সটা আমার ততটা বেশি নয়। কিন্তু তারপরও অনেকবার নিজের বয়সটা ভুলে যাই।’
একই দিন কোর্টে আধিপত্য বিস্তার করে গেছেন নোভাক জোকোভিচ। ১ ঘণ্টা ৪৪ মিনিটের লড়াইয়ে প্রতিপক্ষকে পাত্তা না দিয়ে শীর্ষবাছাই সার্বিয়ান সুপারস্টার জায়গা করে নিয়েছেন কোয়ার্টার ফাইনালে। ২০তম বাছাই ফরাসি খেলোয়াড় আদ্রিয়ান মান্নারিনোকে ৬-০, ৬-০ ও ৬-৩ গেমে ধসিয়ে দিয়েছেন ২৫ মেজর ট্রফির খোঁজে মরিয়া জোকোভিচ।