বিপিএল
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৭:২২ পিএম
আপডেট : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৭:৩৪ পিএম
ক্রিকেটে একটা প্রবাদ আছে, ক্যাচ মিস তো ম্যাচ মিস। বিপিএলে আজ দিনের প্রথম ম্যাচে খুলনা টাইগার্সের সঙ্গে যেন সে কথাটাই মিলে গেল পুরোপুরি। রান তাড়ায় সিলেটের ইনিংসে চললো ক্যাচ মিসের মহড়া। এরপর ১৯তম ওভারে পেসার রুবেল হোসেন দিলেন ২৪ রান। ডানহাতি এই পেসারের ওপর দিয়ে রীতিমতো ঝড় বইয়ে দিলেন জিম্বাবুইয়ান অলরাউন্ডার রায়ান বার্ল। তার ঝড়ো ইনিংসে ভর করে ৫ উইকেটের জয়ে প্লে অফের আশা বাঁচিয়ে রাখল সিলেট স্ট্রাইকার্স।
শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এবারের বিপিএলের ২৩তম ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৫৩ রান তুলেছিল খুলনা টাইগার্স। জবাব দিতে নেমে হ্যারি টেক্টরের ফিফটির পর বার্লের ক্যামিও ইনিংসে ১ ওভার হাতে রেখেই জয় তুলে নেয় সিলেট ফ্র্যাঞ্চাইজি। এটি তাদের এবারের আসরের তৃতীয় জয়।
১৫৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে সিলেটের হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন হ্যারি টেক্টর ও সামিত প্যাটেল। তবে ভয়ংকর হয়ে ওঠার আগেই সামিতকে সাজঘরে ফেরান নাহিদুল। আউট হওয়ার আগে ১৩ করেন তিনি। এরপর নাজমুল হোসেন শান্ত ব্যাটিংয়ে এসে টেক্টরকে নিয়ে দলের হাল ধরেন।
দ্বিতীয় উইকেটে তারা দুজনে ৫২ রানের জুটি গড়েন। তবে ব্যাট হাতে থিতু হয়েও ব্যক্তিগত ইনিংস বড় করতে পারেননি শান্ত। দেয়ালের ঘূর্ণিতে সোহানের তালুবন্দী হন এ বাঁহাতি ব্যাটার। বিদায়ের আগে ১৬ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ১৮ রান করেন তিনি। এরপর ক্রিজে এসেই দেয়ালের বলে রুবেলকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন জাকির হাসান।
পরপর দুই উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে দলটি। তবে সিলেট দলপতি মোহাম্মদ মিথুনকে সঙ্গে নিয়ে দলকে বিপদমুক্ত করেন টেক্টর। সেই সঙ্গে ৪২ রানের জুটি গড়েন তারা। ম্যাচের ১৫তম ওভারে দেয়ালের ঘূর্ণিতে সাজঘরে ফেরেন মিথুন (২৪)।
অপরপ্রান্তে ব্যাট হাতে লড়াই চালিয়ে ফিফটি করেন টেক্টর। অবশ্য সুমনের বলে ৬১ রানেই থামতে হয়েছে তাকে। শেষ দুই ওভারে সিলেটের জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৯ রান। কিন্তু রুবেলের এক ওভারেই ঝোড়ো ব্যাটিং করে দলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন রায়ান বার্ল। তিনি ১৬ বলে অপরাজিত ছিলেন ৩২ রানে।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো শুরুরই আভাস দিয়েছিলেন খুলনা টাইগার্সের দুই ওপেনার এভিন লুইস ও এনামুল হক বিজয়। তবে সেই ধারাবাহিকতা রাখতে পারেনি দলটি। তৃতীয় ওভারে সামিত প্যাটেলের বলে ১২ রান করে আউট হয়ে যান এভিন লুইস। এরপর তিনে নামা আফিফ হোসেনকে নিয়ে দলকে টেনে নিয়ে যান বিজয়।
ব্যাট হাতে শুরু থেকেই মারমুখী রূপ ধারণ করেছিলেন আফিফ। তাতে পাওয়ার প্লের ছয় ওভারেই স্কোরবোর্ডে ৪৬ রান জমা করে টাইগার্স বাহিনী। তবে সেট হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি আফিফ। ৮ম ওভারে বেনি হাওয়েলের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। বিদায়ের আগে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ২৪ রান করেন বাহাতি এই ব্যাটার।
এরপর চারে নেমে মাহমুদুল হাসান জয় দাড়াতেই পারেননি। সানজামুলের বলে তানজিম হাসান সাকিবের হাতে ক্যাচ দেওয়ায় ১ রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। দলীয় ৫৪ রানে ৩ উইকেট হারানো খুলনা শঙ্কায় ছিল অল্পতে গুটিয়ে যাওয়ার।
তবে অধিনায়ক বিজয় আরও একবার খুলনাকে টেনে তুলেন। তাকে দারুণ সঙ্গ দেন হাবিবুর রহমান সোহান। এর মাঝে এবারের আসরে তৃতীয় ফিফটির দেখা পেয়ে যান বিজয়। শেষদিকে সোহানও তাণ্ডব চালিয়েছেন সিলেটের বোলারদের ওপর। ৩০ বলে সমান ৩টি করে চার-ছক্কায় ৪৩ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন এই হার্ডহিটার ব্যাটার। অধিনায়ক বিজয় ৫৮ বলে ৬৭ রানের অধিনায়কোচিত ইনিংস খেলেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
খুলনা টাইগার্স: ২০ ওভারে ১৫৩/৪ (এনামুল ৬৭*, লুইস ১২, আফিফ ২৪, জয় ১, সোহান ৪৩; সানজামুল ৪-০-১৬-১, তানজিম ৩-০-২৬-১, সামিত ৪-০-২২-১, টেক্টর ১-০-৮-০, রেজাউর ৩-০-৪৫-০, হাওয়েল ৪-০-২৭-১, বার্ল ১-০-৭-০)
সিলেট স্ট্রাইকার্স: ১৯ ওভারে ১৫৯/৫ (টেক্টর , সামিত ১৩, শান্ত ১৮, জাকির ০, মিঠুন ২৪, বার্ল ৩২*; নাহিদুল ৩-১-১১-১, সুমন ৪-০-৩৬-১, ডেয়াল ৪-০-১৯-৩, রাজিথা ৩-০-২৯-০, নাসুম ৩-০-২৬-০, রুবেল ২-০-৩৬-০)।
ফল: সিলেট স্ট্রাইকার্স ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ: হ্যারি টেক্টর।