প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০২ মার্চ ২০২৪ ০৫:২২ এএম
আপডেট : ০২ মার্চ ২০২৪ ০৫:৪৬ এএম
শিরোপা জয়ের পির গ্যালারিতে থাকা বরিশালের দর্শকদের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছেন তামিম ইকবাল, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, খালেদ আহমেদরা; ছবি: সংগৃহীত
ফিটনেস সমস্যার কারণে বিপিএলের শুরুর দিকে ছিলেন না মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। যে কারণে গ্রুপ পর্বে প্রথম ৬ ম্যাচে খেলতেই পারেননি তিনি। এরপর বিপিএলের মাঝপথে মাঠে নামার জন্য বিসিবির গ্রিন সিগন্যাল পান এই পেস অলরাউন্ডার। আর মাঠে ফিরেই ফরচুন বরিশালের জার্সিতে চমক দেখান তিনি। আসরের শুরুতে তামিম ইকবালের দল ছিল ছন্নছাড়া, দলও পাচ্ছিল না কাঙ্কিত জয়ের দেখা। তবে সাইফের প্রত্যাবর্তনের পর যেন পালটে গেল গোটা দলের রুপ। পরের ৯ ম্যাচে যা করেছেন, অনেকের কাছে তিনি হতে পারেন অনুকরণীয়।
যে বরিশাল নয় আসরের মধ্যে তিনবার ফাইনাল খেলেও শিরোপা জিততে পারেনি, সে দলটিই কিনা এবার বিপিএলের মুকুট হাতে পেয়েছে। গ্রুপ পর্বের চতুর্থ দল হিসেবে প্লে-অফ নিশ্চিত করার পর চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে এলিমিনেটর এবং রংপুর রাইডার্সকে কোয়ালিফায়ার থেকে বিদাহ করে। সবশেষ ফাইনাল ম্যাচে টুর্নামেন্টের সেরা দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে হারিয়ে ঘুরেছে অধরা ট্রফির ছোঁয়া। বরিশালের সমর্থকদের প্রথমবার শিরোপা জয়ের খুশিতে ভাসাতে ব্যাটে-বলে দারুণভাবে অবদান রাখেন সাইফ। যে কারণে বড়ভাই তামিমের কাছ থেকে বিশেষ উপহার হিসেবে জোড়া ব্যাট উপহার পাচ্ছেন এই টাইগার অলরাউন্ডার। মূলত তামিমই তাকে বরিশাল চ্যাম্পিয়ন হলে জোড়া ব্যাট দেওয়ার কথা বলেছিলেন। দলকে শিরোপা জিতিয়ে সে টার্গেট পূরণ করতে পেরে খুশি সাইফ।
শুক্রবারের ফাইনালে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে ৬ উইকেটে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে ফরচুন বরিশাল। এরপর মাঠের মধ্যেই মুশফিক-রিয়াদসহ দলের বাকিদের সঙ্গে উল্লাসে মাতেন সাইফও। উদযাপনের মুহূর্তে তামিমের থেকে জোড়া ব্যাট উপহার পাওয়ার কথা নিজেই জানান তিনি, ‘সবমিলিয়ে আলহামদুলিল্লাহ। আমাকে তামিম ভাই বলেছিলেন দুইটা ব্যাট দেবে চ্যাম্পিয়ন হলে। এজন্য আমি আরও বেশি খুশি। অনেকের অনেক নেশা থাকে। টাকার নেশা বা বাড়ি-গাড়ি-জমি, আমার এসব নেশা নাই; আমার শুধু ব্যাটের নেশা।’
এবারের বিপিএলে ৯ ম্যাচে ১৪ উইকেট শিকার করেছেন সাইফউদ্দিন। নতুন বল কিংবা ডেথ ওভার যেখানেই সুযোগ পেয়েছেন বল হাতে মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন তিনি৷ প্রতিপক্ষের তারকা সব ব্যাটারদের কাবু করেছেন হরহামেশাই। ফাইনালেও বল হাতে নিজের কার্যকারিতা প্রমাণ করেছেন ডানহাতি এই পেসার। আন্দ্রে রাসেলকে শেষ ওভার বল করে দেননি কোনো বাউন্ডারি। চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেই কথা নিয়ে সাইফউদ্দিন বলেন, ‘অসাধারণ। যখন রাসেল আগের ওভারে আমাকে দুটি ছক্কা মেরেছিল, আমাকে ওনি (তামিম) এপ্রিশিয়েট জানিয়ে বলেছিল ইয়র্কার বল দিস। যার কারণে আমার আত্মবিশ্বাস ছিল রাসেল আমাকে একটাও বাউন্ডারি মারতে পারবে না। ’
তামিম যে শুধু তার অধিনায়ক নন, সেটাও অকপটে স্বীকার করেছেন সাইফউদ্দিন। এবারের বিপিএলের ড্রাফটে কেউই তাকে দলে নেয়নি। মূলত চোটের কারণে তার খেলা অনিশ্চিত থাকায় কোনো দল তার প্রতি আগ্রহ দেখায়নি। পরে অবশ্য তামিম তাকে নিজের দল বরিশালে সুযোগ দেয়। আর সুযোগ পেয়ে সেটা দারুণভাবে কাজে লাগান সাইফ। তাই তামিমকে প্রশংসার জোয়ারে ভাসিয়ে আরও বলেন, ‘সত্যি বলতে বড় ভাই বা অধিনায়ক হিসেবে না; উনি আমার পরিবারের সদস্যের মতো। হয়তো উনি আমাকে এরকম বুস্ট আপ না করলে...(বিপিএলে) এত ভালো খেলা হতো না।’