সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ
প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১০ মার্চ ২০২৪ ১৭:২৫ পিএম
আপডেট : ১০ মার্চ ২০২৪ ২১:৫০ পিএম
বাংলাদেশের মেয়েদের শিরোপা উৎসব
সাফ নারী ফুটবলে বাংলাদেশ-ভারত শিরোপার লড়াই মানেই ভিন্ন আবেদন। আকাশছোঁয়া উত্তেজনা রূপ নেয় স্নাযুযুদ্ধে। গত মাসে সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে টাইব্রেকারে ২২ পেনাল্টি শেষে দুদলই থাকে ১১-১১ সমতায়। শেষ পর্যন্ত অনেক নাটকীয়তার পর শিরোপা ভাগাভাগি করে দুদল। অনূর্ধ্ব-১৬ সাফে অবশ্য ভাগাভাগি নয় ভারতকে টাইব্রেকারে ৩-২ ব্যবধানে হারিয়ে এককভাবেই শিরোপা উৎসব করেছে বাংলাদেশের মেয়েরা।
কাঠমান্ডুর আনফা কমপ্লেক্সে গতকাল রবিবার সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী টুর্নামেন্টের ফাইনালে নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষ হয় ১-১ সমতায়। ম্যাচের পঞ্চম মিনিটে ভারতকে এগিয়ে নেয় আনুশকা কুমারী। খেলার ৭০ মিনিটে বাংলাদেশকে সমতায় ফেরায় মরিয়ম বিনতে হান্না। আর তাতে জেগে ওঠে গত মাসের অনূর্ধ্ব-১৯ ফাইনালের নাটকীয়তার আবহ। দুটি ফাইনালের মধ্যে সাদৃশ্য লক্ষণীয়। দুই ফাইনালেই নির্ধারিত সময়ে স্কোরলাইন ১-১। দুই ম্যাচেই ভারত লিড নেয়। পিছিয়ে পড়ে সমতায় ফেরে বাংলাদেশ। এরপর রুদ্ধশ্বাস টাইব্রেকার।
পেনাল্টি শুটআউটের শুরুতেই বিপত্তি। বাংলাদেশের গোলমেশিন সুরভী আকন্দ প্রীতির শট রুখে দেয় ভারতীয় গোলরক্ষক। প্রথম সুযোগেই এগিয়ে যায় ভারত। গোল করে সবিতা রানী। তবে নার্ভ ধরে রেখে লক্ষ্যভেদ করে মরিয়ম।
এর পরের গল্পটা বাংলাদেশ গোলরক্ষক ইয়ারজান বেগমের। ভারতের আলেনা দেবির শট ঝাঁপিয়ে পড়া ইয়ারজানের গ্লাভস ছুঁয়ে ফিরে আসে পোস্টে লেগে। স্বস্তি ফেরে বাংলাদেশ শিবিরে। তৃতীয় শটে থুইনুই মারমা ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে নেয় বাংলাদেশকে। প্রতিপক্ষ দলের বোনিফিলিয়া শুল্লাইয়ের শট আটকিয়ে লিড ধরে রাখে ইয়ারজান। কিন্তু আলপি আক্তারের নেওয়া চতুর্থ শট লাগে পোস্টে।
ভারতকে সমতায় ফেরায় অনিতা। টাইব্রেকারে ২-২ সমতা। স্নায়ুর লড়াই ওঠে চরমে। বাংলাদেশের হয়ে পঞ্চম শটে লক্ষ্যভেদ করে সাথী মুন্ডা। এককভাবে শিরোপার জন্য সবাই তাকিয়ে ইয়ারজানের বিশ্বস্ত হাতের দিকে। নিরাশ করেনি বাংলার এই বাজপাখি। ভারতের দিবানি লিন্ডার শট ফিরিয়ে দিয়ে দলকে পরম কাঙ্ক্ষিত শিরোপা এনে দেয় ইয়ারজান। হাতে বল ফিরিয়েই মাঠে শুয়ে পড়ে ইয়ারজান। তাকে ঘিরে উৎসবে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে সোনার মেয়েরা।
ম্যাচের শুরুতে দর্শকরা ঠিকমতো জমিয়ে বসার আগেই পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। পঞ্চম মিনিটে লিড নিয়ে নেয় ভারত। মাঝমাঠ থেকে সতীর্থের বাড়িয়ে দেওয়া বল নিয়ন্ত্রণে নেয় আনুশকা। বাংলাদেশের গোলরক্ষক ইয়ারজানকে পরাস্ত করে ভারতকে লিড এনে দেয় সে। আসরে এটি আনুশকার পঞ্চম গোল। প্রথমার্ধে ১-০ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় ভারত।
দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশের শুরুটা ছিল বেশ সাদামাটা। তবে ধীরে ধরে নিজেদের গুছিয়ে নেয় বাংলার বাঘিনীরা। ম্যাচের ৭০ মিনিটে অনন্যা বিথীর কর্নার থেকে বক্সের মধ্যে বল পেয়ে নিখুঁত প্লেসিংয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরায় মরিয়ম। ম্যাচের বাকি সময় গোল করতে পারেনি দুদলই। নিয়মানুযায়ী টাইব্রেকারের সিদ্ধান্ত নেন রেফারি।
টাইব্রেকারে বাংলাদেশের গোলরক্ষক ইয়ারজানের দৃঢ়তায় শিরোপা-উৎসবে মাতে মেয়েরা। টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার পায় সুরভী আকন্দ প্রীতি। লিগ পর্বে এই ভারতকে ৩-১ ব্যবধানে হারিয়েছিল সাইফুল বারী টিটুর শিষ্যরা। সব মিলিয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কৃতিত্ব দেখাল মেয়েরা।