প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৪ মার্চ ২০২৪ ০৬:৪৭ এএম
আপডেট : ১৪ মার্চ ২০২৪ ২৩:০৬ পিএম
অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের ফুটবলারদের কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার আনন্দ উৎসব
মাঠের লড়াইয়ে দীর্ঘ সময় এগিয়ে ছিল ইন্টার মিলান। মনে হচ্ছিল দুই লেগ মিলিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ আটের টিকিট কাটবে তারাই। কিন্তু দুর্ভাগ্য! কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা হলো না ইতালির জায়ান্ট ক্লাবটির। টাইব্রেকারে কপাল পুড়ল তাদের। শুটআউটে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের কাছে ৩-২ গোলে ধরাশায়ী হয়ে টুর্নামেন্টের শেষ ষোলো থেকেই ছিটকে গেল গতবারের ফাইনালিস্ট ইন্টার।
বুধবার রাতে অ্যাটলেটিকোর ঘরের মাঠে আতিথ্য নিয়ে ছিল ইন্টার নিজেদের এগিয়ে রেখেই। প্রথম লেগে ১-০ গোলে জিতে লড়াইয়ের লিডিং পজিশনেই ছিল গত আসরে ফাইনাল খেলা দলটি। ফিরতি লেগেও দুর্দান্ত খেলতে থাকে। ম্যাচের ৩৩ মিনিটের মাথায় স্বাগতিক অ্যাটলেটিকোর জাল কাঁপিয়ে দেয় ইন্টার। দুই লেগ মিলিয়ে তখন পর্যন্ত ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে ছিল ইন্টার।
কিন্তু নিজেদের মাঠে খেলা বলে কথা। উদ্বুদ্ধ অ্যাটলেটিকো ছন্দ ফিরে পায় দ্রুতই। গোল হজম করেই ফেরে নিজেদের চেনা রূপে। ইন্টারের জালে ২ গোল দিয়ে দ্বিতীয় লেগে ২-১ গোলে এগিয়ে থেকে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে টিকে থাকে স্বাগতিকরা।
কিন্তু দুই লেগ মিলিয়ে ২-২ গোলে সমতা বিরাজ করছিল তখন লড়াইয়ে। ফলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। যেখানে দুই দল আর কোনো গোল না পাওয়ায় ম্যাচের ভাগ্য গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানেই ইন্টারের হৃদয় ভাঙে অ্যাটলেটিকো। পৌঁছে যায় চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে।
টাইব্রেকারের বৈতরণি পেরিয়ে যাওয়া মোটেই সহজ নয়। যেখানে মনোবল রাখতে হয় ইস্পাতকঠিন। কিন্তু দলের সেই কঠিন সময়ে স্নায়ুচাপ সামাল দিতে পারেননি ইন্টারের ফুটবলাররা। মাঠের উত্তাপের কাছে মাথা নত করে পেনাল্টি শট মিস করেন ইন্টারের মার্তিনেজ।
পেনাল্টি শ্যুটআউট থেকে লাওতারো মার্তিনেজ প্রতিপক্ষের গোলরক্ষককে বোকা বানিয়ে শট পাঠাতে চেয়েছিলেন জালে। কিন্তু তার ক্ষিপ্রগতির শট উড়ে মাঠের বাইরে চলে যায় গোলবারের ওপর দিয়ে। মার্তিনেজের শটের সঙ্গে ইন্টার মিলানও ছিটকে যায় চ্যাম্পিয়নস লিগের বাইরে।
আর অ্যালেক্সিস সানচেজ ও ডেভি ক্লাসেনের শট তো রুখে দিয়ে ম্যাচের নায়ক বনে যান অ্যাটলেটিকো গোলবারের অতন্দ্রপ্রহরী ইয়ান ওবলাক।
ইন্টারের মানসিক চাপে নিমজ্জিত হলেও দারুণ উজ্জীবিত ছিল অ্যাটলেটিকো। নিজেদের প্রথম চার শটের তিনটি প্রতিপক্ষের জালে জড়িয়ে ইউরোপের সেরাদের আসরের শেষ আটে ঠিকই জায়গা করেন নেয় কোচ ডিয়েগো সিমিওনের শিষ্যরা। পঞ্চম শট নেওয়ার প্রয়োজনই পড়েনি। তার আগেই জয় ছিনিয়ে নেয় ম্যাচের আয়োজকরা।
এ নিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগে তিনবার পেনাল্টি শুটআউটে জয় পেল অ্যাটলেটিকো। উয়েফার ক্লাব ফুটবলের সবচেয়ে মর্যাদাকর এ আসরে এমন দুরন্ত কীর্তি নেই অন্য কোনো দলেরই।
ম্যাচ মাঠে গড়াতেই জমে উঠে লড়াই। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচের ৩৩ মিনিটে ফেদেরিকো দিমারকোর গোলে লড়াইয়ের ডেডলক ভাঙে ইন্টার। বাঁ দিক থেকে নিকোলা বারেল্লার বক্সে ঠেলে দেওয়া বল রক্ষণভাগের এ ফুটবলারকে স্পর্শ করে আশ্রয় নেয় জালে। দুই লেগ মিলিয়ে লড়াইয়ে তখন ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে ইন্টার। তবে দুই মিনিট না যেতেই খেলায় ফেরে অ্যাটলেটিকো। কোকের অ্যাসিস্টে ইন্টারকে গোল হজমে বাধ্য করেন আন্তোনিও গ্রিজম্যান। তবে অ্যাটলেটিকো সমতাসূচক গোলটি পায় ম্যাচের ৮৭ মিনিটে। এ গোলেও অবদান রাখেন কোকে। তার কাছ থেকে বল পেয়েই প্রতিপক্ষের জাল কাঁপিয়ে দেন মেম্ফিস ডিপাই।
অন্যদিকে পিএসভি আইন্দোহোভেনকে হারিয়ে শেষ আটে নাম লিখেছে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। প্রথম লেগে ১-১ গোলের সমতা নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল দুই দল। বুধবার রাতে সিগন্যাল এদুনা পার্কে দ্বিতীয় লেগে ২-০ গোলে জিতেছে ডর্টমুন্ড। দুই লেগ মিলিয়ে ৩-১ গোলে জিতে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে জার্মান ক্লাবটি।
ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে ডর্টমুন্ডের হয়ে গোল উপহার দেন জোদান সানচো। আর ৯৫তম মিনিটে মার্কো রয়েস ডর্টমুন্ডকে দ্বিতীয় গোল এনে দেন।