আইপিএল টিম প্রিভিউ
আবদুল্লাহ আল মাসুম
প্রকাশ : ২০ মার্চ ২০২৪ ১৩:২৯ পিএম
আপডেট : ২০ মার্চ ২০২৪ ২০:৫০ পিএম
সোনালি অতীত কি ফিরবে কলকাতার। ফটো কোলাজ
সারা বিশ্বের ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের সবচেয়ে জনপ্রিয় আসর ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)। আগামী ২২ মার্চ শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে ভারতীয় এই টুর্নামেন্টের ১৭তম আসর। আগের আসরের মতো এবারও ৯৪ ম্যাচের বিরাট এ মহাযজ্ঞে থাকছে ১০টি ফ্রাঞ্চাইজি। সবগুলো দলের হালচাল, শক্তিমত্তা, দুর্বলতা, নানা বিষয় নিয়ে প্রতিদিনের বাংলাদেশের ধারাবাহিক দল পর্যালোচনায় এ পর্বে থাকছে কলকাতা নাইট রাইডার্স।
বলিউড কিং শাহরুখ খানের মালিকানাধীন আইপিএলের অন্যতম সেরা দল কলকাতা নাইট রাইডার্স। টুর্নামেন্টের রেকর্ড পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ও চেন্নাই সুপার কিংসের পরেই তাদের অবস্থান। গৌতম গম্ভীরের নেতৃত্বে ২০১২ এবং ২০১৪ আসরের চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল নাইট রাইডার্সরা। এরপর গত এক দশক ধরে কলকাতার শোকেশে উঠেনি আর কোনো ট্রফি। ২০২১ সালেও অবশ্য ফাইনালে উঠেছিল কলকাতা, তবে শিরোপা ছুঁয়ে দেখা হয়নি তাদের। পরের দুই সংস্করণেই পয়েন্ট টেবিলের সপ্তম স্থানে শেষ করেছে ওপার বাংলার দলটি।
এবার সোনালি দিন ফেরানোর লক্ষ্যে মৌসুম শুরুর আগে প্লেয়ার্স ড্রাফট থেকে অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপজয়ী তারকা পেসার মিচেল স্টার্ককে আইপিএল ইতিহাসে রেকর্ড ২৫.৭৫ কোটি রুপিতে কিনেছে তারা। যা নিয়ে রীতিমত হইচই পড়ে গেছে ক্রিকেট পাড়ায়। এছাড়া ২০১৪ সালে কেকেআর-এর শিরোপাজয়ী দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য মনীষ পান্ডে, ভারতের জাতীয় দলের উইকেটরক্ষক-ব্যাটার কেএস ভরত, ইংল্যান্ডের উইকেটরক্ষক-ব্যাটার ফিল সল্ট ও আফগান স্পিনার মুজিব উর রহমানকেও দলভুক্ত করে দলটি।
কেকেআর সম্ভাব্য একাদশে জায়গা করে নিতে পারেন আফগান ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ। তার সঙ্গে ভেঙ্কটেশ আইয়ার ওপেন করতে পারেন। দলের অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার তিনে নামতে পারে। চারে খেলতে পারেন নীতিশ রানা, রিঙ্কু সিং পাঁচে নেমে ফিনিশারের দায়িত্ব থাকবেন। এরপর নামতে পারেন যথাক্রমে আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারিন, মিচেল স্টার্ক, চেতন সাকারিয়া, বরুণ চক্রবর্তী এবং বৈভব অরোরা। ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে কেকেআরের হয়ে এ বার খেলতে দেখা যেতে পারে মনীষ পান্ডে বা সুয়েশ শর্মাকে।
কলকাতা নাইট রাইডার্সের সবচেয়ে বড় তারকা ‘টি-টোয়েন্টির ফেরিওয়ালা’ খ্যাত অ্যান্দ্রে রাসেল ও সুনীল নারিন। এই দুই ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার এক দশকেরও বেশি সময় কেকেআর শিবিরের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে আছেন। কলকাতার দুইবারের শিরোপা জয়ে অনেক অবদান ছিল তাদের। বয়স বাড়লেও নিজেদের দিনে প্রতিপক্ষকে একাই দুমড়ে মুচড়ে দিতে পারেন তারা। টিম ম্যানেজমেন্টও এই দুই ক্রিকেটারকে নিয়ে আলাদা পরিকল্পনা কষছেন সেটি আর না বললেও চলে।
শক্তিমত্তা
কেকেআরের নতুন মিশনে দলটির সাবেক অধিনায়ক গৌতম গম্ভীর ফিরেছেন নতুন ভূমিকায়। কলকাতার শিরোপা অভিযানে পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করবেন ভারতের সাবেক এই ওপেনার। দলে ব্যাটিং বোলিং দুই বিভাগেই দেশি ও বিদেশি ক্রিকেটারে ভারসাম্য রেখেছেন তারা। এই দলের শক্তির জায়গা অলরাউন্ডারে। অ্যান্দ্রে রাসেল, সুনীল নারিন, ভেঙ্কটেশ আইয়াররা ব্যাটিং ও বোলিং- দুই ডিপার্টমেন্টেই অবদান রাখতে পারবেন। ব্যাটিংয়ে অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার ও রিংকু সিংয়ের দিকেও এবার আলাদা নজর থাকবে কলকাতার ভক্তদের। আর বোলিংয়ে মিচেল স্টার্ক, মুজিব উর রহমান ও বরুণ চক্রবর্তীরা কাঁপিয়ে দিতে পারে প্রতিপক্ষদের।
কলকাতা নাইট রাইডার্সের বড় দুর্বলতার জায়গা মনে হয় অধিনায়কত্বে৷ গত দুই মৌসুমে পয়েন্ট টেবিলের নিচের দিকে থাকার বড় কারণ ছিল এটি। রিংকু সিং, বরুণ চক্রবর্তীরা ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে ঝলক দেখালেও দল হয়ে খেলতে পারেনি তারা। যার মাসুল দিতে হয়েছে চড়া মূল্যে। গত মৌসুমে কলকাতাকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন নীতিশ রানা। কিন্তু দলকে সেভাবে টেনে নিয়ে যেতে পারেননি তিনিও। এবার নিয়মিত অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার চোট কাটিয়ে ফিরলেও তার নেতৃত্বগুন নিয়ে প্রশ্ন রয়ে যায়। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতি এই ব্যাটারের অধিনায়কত্বের ওপর নির্ভর করবে ফল।
২০১২ চ্যাম্পিয়ন
২০১৪ চ্যাম্পিয়ন
২০২১ রানারআপ
ব্যাটসম্যান: শ্রেয়াস আইয়ার (অধিনায়ক), শ্রীকর ভরত, মনীষ পান্ডে, নিতীশ রানা, রিঙ্কু সিং, রহমানুল্লাহ গুরবাজ, ফিল সল্ট, জেসন রয়, শেরফানে রাদারফোর্ড, অঙ্গক্রিশ রঘুবংশী।
অলরাউন্ডার: ভেঙ্কটেশ আইয়ার, অ্যান্দ্রে রাসেল, সুনীল নারিন, অনুকূল রায়।
বোলার: মিচেল স্টার্ক, মুজিব উর রহমান, দুশমন্থ চামিরা, গুস অ্যাটকিনসন, বরুণ চক্রবর্তী, চেতন সাকারিয়া, সুয়েশ শর্মা, ভৈবব অরোরা, হার্শিত রানা, সাকিব হোসাইন।