প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০২ এপ্রিল ২০২৪ ০১:১৬ এএম
ধারহীন বোলিং, নিস্তেজ ফিল্ডিংয়ে মাথার ওপর চেপেছিল বিশাল রানের বোঝা। টাইগার ব্যাটারদের চরম ব্যর্থতায় সেই বোঝা বেড়েছে আরও। তৃতীয় দিন শেষে স্বাগতিকদের ম্যাচ তথা সিরিজ হারটা হয়ে উঠেছে সময়ের ব্যাপারে। দিনের শেষে ব্যর্থতা স্বীকার করে নিয়েছেন বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে একমাত্র হাফসেঞ্চুরিয়ান জাকির হাসান।
সতীর্থ ব্যাটারদের দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিংয়ের কোনো ব্যাখ্যা নেই টাইগার ওপেনার জাকির হাসানের। সংবাদ সম্মেলনে জাকির বলেন, ‘আসলে কারণ আর কী বলব। আমরা পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছি। আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী পারফর্ম করতে পারিনি। ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে যেরকম খেলার কথা ছিল আমরা সেভাবে খেলতে পারিনি।’
সিলেট টেস্টের পর চট্টগ্রামেও ব্যর্থ বাংলাদেশি ব্যাটিং লাইনআপ। টস জেতা লঙ্কানরা আগে ব্যাট করে প্রথম ইনিংসে থামে ৫৩১ রানে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১ উইকেটে ৫৫ রান নিয়ে তৃতীয় দিনে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশ থেমেছে মাত্র ১৭৮ রানে। স্বাগতিকদের ফলোঅন না করিয়ে প্রথম ইনিংসে ৩৫৩ রানে এগিয়ে থাকা লঙ্কানরা দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেটে ১০২ রান তুলে দিন শেষ করেছে। যার সুবাদে শ্রীলঙ্কার লিড দাঁড়িয়েছে ৪৫৫ রান।
ব্যর্থতায় মোড়ানো চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশের একমাত্র ইতিবাচক দিক হাসান মাহমুদের বোলিং। অভিষেক টেস্ট খেলতে নামা হাসান প্রথম ইনিংসের পর উজ্জ্বল দ্বিতীয় ইনিংসেও। তৃতীয় দিনের শেষ সেশনে ব্যাট করতে নামা লঙ্কানদের ৬ উইকেটের মধ্যে হাসানের একারই শিকার ৪টি। তাই হাসানের বোলিং দেখে প্রথম দিন শেষে প্রশংসা করেছিলেন বাংলাদেশের পেস বোলিং কোচ আন্দ্রে অ্যাডামস। হাসানের প্রশংসা ঝরেছে জাকির হাসানের কণ্ঠেও, ‘অবশ্যই হাসান মাহমুদ খুবই ভালো বল করেছে। ওর অভিষেক ম্যাচ। সে খুব ভালো মুভমেন্ট পেয়েছে, খুব ভালো জায়গায় বল করেছে।’
তবে ব্যাটিংয়েও উন্নতি করার ওপর জোর দিয়েছেন জাকির, ‘অবশ্যই আপনি একটা টেস্ট ম্যাচ বা যেকোনো ম্যাচ জিততে হলে শুধু বোলাররা ভালো করলেই হবে না। সব বিভাগেই ভালো করতে হবে। ব্যাটিং তো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যদি বোর্ডে রান না দিতে পারি তাহলে কখনোই ডিফেন্ড করতে পারব না। বোলারদের ২০ উইকেট নিতে হলে কিন্তু ভালো একটা রান নিতে হবে। আর আমরা এটা পারছি না।’
শেষ ৫ ইনিংসে টেস্টে ২০০ রানও করতে পারেনি বাংলাদেশ। এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে জাকির জানান, ‘আসলে সবার কথা তো আমি বলতে পারব না। এটা কোচ বা অন্য স্টাফ যারা আছেন তারা ভালো বলতে পারবেন। আমার ক্ষেত্রে যেটা মনে হয় শট সিলেকশনে আরেকটু সতর্ক হলে ভালো হয়। তবে এগুলো কোনো অজুহাত হতে পারে না। একটা টেস্ট ম্যাচ খেলতে এলে সেভাবেই প্রস্তুত হয়ে আসতে হবে। সেই মানসিকতাটা নিয়েই আসা উচিত।’ চট্টগ্রামের ভরাডুবিকে সিলেট টেস্টের ব্যর্থতার প্রভাব হিসেবে দেখছেন না জাকির। তার ভাষায়, ‘এটা আসলে কাজ করা উচিত না। আমি ব্যাটার আমি চেষ্টা করি প্রতিটি দিনই নতুনভাবে শুরু করার। আসলে অন্য কেউ করে কি না আমি জানি না। আমার মনে হয় আগের বিষয়গুলো চিন্তা না করে আমরা যদি বর্তমানে ভালো করতে পারি এটাই গুরুত্বপূর্ণ।’
টেস্ট ক্রিকেটে ব্যাটিংয়ের পরিকল্পনার ব্যাপারে জাকির জানান, ‘আসলে ওইটা তো পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে স্পিন খেলবে না পেস খেলবে। শেষদিকে নাইটওয়াচম্যান নামলে তখন হয়তো ব্যাটারকে সেভ করার চেষ্টা করা হয়। এগুলো আসলে পরের প্ল্যানিং। আমরা তো শুরুর প্ল্যানিংয়ে যে কাজটা করার সেটা করতে পারিনি। আসলে শুরুর প্ল্যানটা যদি আমরা কাজে লাগাতে পারি তখন পরেরটা নিয়ে চিন্তা করা যায়।’ নিজেদের আরও দায়িত্ব নেওয়া উচিত ছিল তা স্বীকার করে জাকির বলেছেন, ‘আমাদের পরিস্থিতি ফেস করতে হবে। আজকে আমার মনে হয় একটু বেশি বাতাস থাকার কারণে বোলাররা সাহায্য পেয়েছে। উইকেট অনুযায়ী সবই ঠিক ছিল। এটা কোনো কথা হতে পারে না যে এই বলের জন্য আউট হয়ে গেছি। আমাদের আরও ভালো খেলা উচিত ছিল।’