প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৪ এপ্রিল ২০২৪ ১৭:৫৮ পিএম
লঙ্কানদের কাছে ২-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে টাইগাররা; ছবি- ইএসপিএন
ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পূর্ণাঙ্গ
সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ দল। টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারলেও ওয়ানডে সিরিজ নিজেদের করে নেয়
টাইগাররা। কিন্তু টেস্টে একদমই ভালো করতে পারেনি নাজমুল হোসেন শান্ত ব্রিগেড। দুই ম্যাচের
সিরিজে লঙ্কানদের কাছে ২-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। ক্রিকেটের
দীর্ঘতম এই ফরম্যাটে টাইগারদের হারের চেয়ে বেশি চোখে লেগেছে লড়াই করতে না পারা। এমন
হতশ্রী পারফরম্যান্স রিভিউ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
আজ বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) মিরপুর শেরে
বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্সের
চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস। এসময় সাংবাদিকদের জালাল জানান, ‘আসলে ম্যাচ তো হারতেই পারে।
কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় নাই। যেটা সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে যদি ওরা ৫০০ রান করতে পারে
তাহলে আমরা ৪৫০ করতে পারলাম না কেন? ৪০০+ করতে পারলাম না কেন? এখানে বড় একটা আক্ষেপ
আছে। হোম গ্রাউন্ড। দুইটা ভালো উইকেটে খেলেছি। আমরা চট্টগ্রাম এবং সিলেট নিয়েছিলাম
ব্যাটারদের সুযোগ দেওয়ার জন্য যাতে ব্যাটাররা রান করতে পারে। আমার কাছে মনে হয়েছে টেস্টে
যারা নতুন প্লেয়ার খেলছে ওদের একটু সময় দিতে হবে। টেস্ট দলে ঢুকে প্রথম থেকেই এডজাস্ট
করা একটু টাফ। ২-৩ জন নতুন প্লেয়ার আছে নাম বলছি না। তাদের সময় লাগবে। অভিজ্ঞ যারা
ছিল যারা রান করে নাই আশা করেছিলাম। কোনো অভিজ্ঞ প্লেয়ার থেকে ২টা জুটি হলে কিন্তু
আমাদের হয়ে যেত। কিন্তু আমরা তাদের কাছ থেকে পাই নাই এটা আমাদের বড় একটা আক্ষেপ। বোলিং
মোটামুটি ভালো হয়েছে।’
প্রস্তুতির ঘাটতি ছিল কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে জালাল বলেন, ‘প্রস্তুতি বলতে কী বুঝাচ্ছেন। প্রস্তুতির জন্য জাতীয় লিগ ছাড়া সুযোগ নাই কারণ সিরিজের পর সিরিজ হতে থাকে। আপনি দেখেন কোন প্লেয়ার সময় পায় বেশি টেস্ট খেলার? এই সুযোগটা নাই। সিরিজ হলে টেস্ট, ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি থাকে। জাতীয় দলের প্লেয়ার হিসেবে এডজাস্ট করেই খেলতে হবে। প্রচুর খেলতে পারলে তো ভালোই হইত। বেশি করে টেস্ট খেলতে পারলে তো ভালোই হত। কিন্তু সেই সুযোগটা হয় না। এবারও আমাদের এ দলের প্রোগ্রাম আছে। এখান থেকে পাকিস্তান যাবে, পাকিস্তান আসবে। নিউজিল্যান্ড আসবে। ভালো হত যদি ইন্ডিয়া সিরিজের আগে খেলতে পারত। সুযোগ তো পাওয়া যায় না। সুযোগ পেলে আরও ভালো হত। এখন সুযোগ বের করা বেশ কঠিন।’
এছাড়া ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রথম শ্রেণির
ক্রিকেট খেলার ব্যাপার ক্রিকেটারদের নিয়মনীতির ব্যাপারে জালাল জানান, ‘আগেও ছিল, আছে।
আমরা চাই বেশিরভাগ প্লেয়াররা যদি এনসিএল খেলে, বিসিএল খেলে আমরা চাই। খেললে আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতা
হয়। আগে কিছু প্লেয়ার ইগ্নোর করত। এখন সময়ে হচ্ছে না। ন্যাশনাল খেলার শিডিউল সো টাইট।
এজন্য তারা সুযোগ পাচ্ছে না। দেখা যাচ্ছে এনসিএলে খেলার সময় সিরিজ হচ্ছে। আমাদের দেখতে
হবে বেশিরভাগ প্লেয়ার যদি সুযোগ থাকে তারা যেন তা কাজে লাগায়। বাধ্যতামূলক করা যায়
না, অনেক সময় অনেক সমস্যা থাকে। আমরা চেষ্টা করেছিলাম অনেক কিন্তু এটা হয় না।’
ঘরোয়া ক্রিকেটের খেলার মানের ব্যাপারে
জালালের ভাষ্য, ‘আমাদের যে রিসোর্স আছে তাদের নিয়েই তো খেলতে হবে। আপনি এর বাইরে কীভাবে
যাবেন। আমাদের প্লেয়ার তারাই খেলছে এখানে। হ্যাঁ জাতীয় দলের প্লেয়ারদের সাথে বাকিদের
একটা তফাত থাকে। আমরা কিন্তু চেষ্টা করি মানসম্পন্ন প্লেয়ার খেলোয়াড়। আমরা নজর দিচ্ছি
সেদিকে। ঈদের পর নির্বাচক, কিছু প্লেয়ার, ক্রিকেট অপারেশন্স আমরা সবাই বসব। আমরা রিভিউ
করব।’
লঙ্কা সিরিজের উইকেটের ব্যাপারে জালাল
জানান, ‘আমার এখানে এ ধরনের উইকেটে খেলা উচিত। এটা আন্তর্জাতিক মানের স্পোর্টিং উইকেট।
যদি আমরা রেজাল্টের জন্য যেতাম আমাদের মত হত। আমার মনে হয় না, প্রতিপক্ষ দলে তাদেরও
সেরা ব্যাটার, স্পিনার আছে। তারাও কিন্তু এখানে কাজে লাগাতে পারে। সুতরাং সুবিধা দুই
সাইডেই। যে সুবিধা আমাদের নেওয়া দরকার ছিল সেভাবেই তৈরি করা হয়েছিল উইকেট।’
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হোম সিরিজ শেষে
আপাতত খেলা নেই বাংলাদেশ দলের। আগামী জুনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠেয়
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি
সিরিজ খেলবে টাইগাররা।