ডিপিএল ২০২৪
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৫ এপ্রিল ২০২৪ ১৮:২৭ পিএম
আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ১০:১১ এএম
আবাহনীর দশে দশ; ছবি : আ. ই. আলীম
ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের (ডিপিএল) ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন আবাহনী লিমিটেড। চলতি আসরেও জয়ের ধারা অব্যাহত রেখেছে তারা। সবশেষ ম্যাচে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে ৫৮ রানের জয় পেয়েছে আকাশী-নীল জার্সিধারীরা। এ নিয়ে টানা ১০ ম্যাচে জয় পেয়েছে আবাহনী। অন্যদিকে দশম ম্যাচে এসে প্রাইম ব্যাংকের এটি চতুর্থ হার।
সোমবার (১৫ এপ্রিল) মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় আবাহনী-প্রাইম ব্যাংক। টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে মোহাম্মদ নাঈম শেখ-নাজমুল হোসেন শান্তর শতকে ভর করে ৩৪১ রানের পাহাড় গড়ে আবাহনী। রান তাড়ায় মুশফিকুর রহিমের শতকের পরও ৪৯.২ ওভারে ২৮৩ রানে অলআউট হয়ে থামে প্রাইম ব্যাংক।
এদিন টস জিতে আবাহনীকে প্রথমে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানায় প্রাইম ব্যাংক। ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ১১০ রানের জুটি গড়েন নাঈম শেখ ও এনামুল হক বিজয়। ৭৩ বলে ৪৫ রান করে রান-আউট হন বিজয়। তবে সেঞ্চুরি হাঁকান আরেক ওপেনার নাঈম শেখ। ১০৪ বলে ১০৫ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। প্রায় ১০১ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসে নাঈম হাঁকান ১০টি চার ও দুটি ছক্কা।
এরপর সেঞ্চুরি হাঁকান আবাহনীর অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও। ১১৮ রান আসে কাপ্তানের ব্যাট থেকে। মাত্র ৮৫ বলে এই শতরানের ইনিংস খেলেন তিনি। শান্তর ব্যাট থেকে আসে আসে দৃষ্টিনন্দন ১৩টি চার ও চারটি ছক্কা। হাসান মাহমুদের বলে বোল্ড হন এই বাঁহাতি ব্যাটার। তার স্ট্রাইকরেট ছিল প্রায় ১৩৯।
তাওহিদ হৃদয় খেলেন বিধ্বংসী ইনিংস। মাত্র ৩৫ বলে করেন ৬৫ রান। টর্নেডো এই ইনিংসের পথে হৃদয় হাঁকান দুটি চার ও চারটি ছক্কা। হৃদয়ের ঝড় বইয়ে দেওয়ার ইনিংসের স্ট্রাইকরেট ছিল প্রায় ১৮৬। প্রাইম ব্যাংকের পক্ষে হাসান মাহমুদ দুটি উইকেট শিকার করেন। একটি উইকেট পান রেজাউর রহমান রাজা।
৩৪৬ রানের বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের। মাত্র ১ রান করেই বিদায় নেন ড্যাশিং ওপেনার তামিম ইকবাল। ৭ বল মোকাবিলার ইনিংসের তাসকিন আহমেদের বলে ক্যাচ আউট হন তিনি। এই ম্যাচে প্রাইম ব্যাংককে নেতৃত্ব দেওয়া জাকির হাসান থামেন ৮ রানে। তিনি তাসকিনের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন। তারপর শাহাদাত হোসেন দিপুকে বোল্ড করেন তানজিম হাসান সাকিব। দিপু একটি করে চার ও ছক্কায় ১২ বলে ১২ রান করেন।
৪৩ রানে টপ অর্ডারের তিন ব্যাটারকে হারিয়ে ফেলে প্রাইম ব্যাংক। তারপর চতুর্থ উইকেটে ৮৩ রানের জুটি গড়েন ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন ও মিস্টার ডিপেন্ডেবল মুশফিকুর রহিম। তাদের এই জুটি ভেঙে যায় ইমন আউট হওয়ার মাধ্যমে। অর্ধশতক হাঁকানোর পর থামেন তিনি। ৭০ বলে ৫৬ রান করে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের বলে আউট হন ইমন। তার ইনিংসে ছিল পাঁচটি চার ও তিনটি ছক্কা। তারপর মিঠুন পারেননি মুশফিককে সঙ্গ দিতে। ১২ বলে ৭ রান করে আউট হন মিঠুন। তাকেও শিকার করেন সাকিব।
অলক কাপালি নেমেই ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের ইঙ্গিত দেন। তাকেও থামিয়ে দেন পেসার সাকিব। ১০ বলে চারটি বাউন্ডারিতে ১৮ রান করে বিদায় নেন কাপালিও। মুশফিক সঙ্গী হারানোর সঙ্গে সঙ্গে প্রাইম ব্যাংকও হারের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। সপ্তম উইকেটে মুশফিকের সঙ্গে ৪৮ রানের জুটি গড়েন শেখ মেহেদী হাসান। ২৭ বলে ২৫ রান করে তাসকিনের তৃতীয় শিকারে পরিণত হন তিনি। মেহেদীর ব্যাট থেকে আসে চারটি চার। ৪৪তম ওভারে সাকিবের বলে পুল করে চার হাঁকিয়ে ৯৬ বলে শতক পূর্ণ করেন মুশফিক।
শান্তর বলে হাসান মাহমুদের ক্যাচ নিতে গিয়ে পায়ের পেশিতে টান পান তাসকিন আহমেদ। কিছুক্ষণ প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়ার পর খোঁড়াতে খোঁড়াতে মাঠ ছাড়েন তাসকিন। নবম উইকেটে মুশফিকের সঙ্গে ৪৮ রানের জুটি গড়েন হাসান। শান্তর বলেই ক্যাচ আউট হন তিনি। শরিফুলের তালুবন্দি হওয়ার আগে হাসান করেন ২৪ বলে ৩৪ রান। প্রায় ১৪২ স্ট্রাইকরেটের ইনিংসে হাঁকান তিনটি চার ও চারটি ছক্কা। নির্ধারিত ৫০ ওভারের ৩ বল বাকি থাকতেই অলআউট হয় প্রাইম ব্যাংক। ২৮৩ রানে থামে তাদের ইনিংস। ফলে ৫৮ রানে হারে দল। তবে মুশফিক অপরাজেয় থাকেন ১১১ রানে। ১০৫ বলের ইনিংসে মুশফিক হাঁকান ১৪টি বাউন্ডারি।
আবাহনীর পক্ষে তাসকিন ১০ ওভারে ৪৬ রান দিয়ে তিন উইকেট এবং সাকিব ১০ ওভারে ৪৪ রান দিয়ে তিন উইকেট শিকার করেন। দুটি উইকেট পান মোসাদ্দেক। একটি করে উইকেট পান শান্ত ও আফিফ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
আবাহনী লিমিটেড : ৫০ ওভারে ৩৪১/৪ (নাজমুল হোসেন শান্ত ১১৮, নাঈম শেখ ১০৫, তাওহিদ হৃদয় ৬৫*; হাসান মাহমুদ ২/৭৬, রেজাউর রহমান রাজা ১/৭৬)।
প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব : ৪৯.৪ ওভারে ২৮৩/১০ (মুশফিকুর রহিম ১১১*, পারভেজ হোসেন ইমন ৫৬, হাসান মাহমুদ ৩৪; তানজিম হাসান সাকিব ৩/৪৪, তাসকিন আহমেদ ৩/৪৬)।
ফল: আবাহনী লিমিটেড ৫৮ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা : নাজমুল হোসেন শান্ত।