অধিনায়কের ভাবনা
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ২১:১৪ পিএম
দর্শকদের কাছে বাড়তি প্রত্যাশা না রাখার অনুরোধ রেখেছেন টাইগার দলনেতা— ফাইল ছবি
বিশ্বকাপ আসে-যায়, দল-ভেন্যু-ফরম্যাট সব বদলায়; কিন্তু টাইগারদের পারফরম্যান্স অভিন্নÑ ব্যর্থতা! ওয়ানডে কিংবা টি-টোয়েন্টির বৈশ্বিক আসরে বাংলাদেশের পাওয়ার ঝুলিও তাই নিরেট ফাঁকা। এখন অবধি বলার মতো কিছু করে দেখাতে না পারলেও প্রতিটি বিশ্বকাপের আগে শিরোপা স্বপ্নের ফানুস ওড়ায় বাংলাদেশ। তবে বাইশ গজের খেলায় প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির মাঝে থাকে বিশাল ফারাক। আরেকটি বিশ্বকাপ সামনে রেখে তাই পুরোনো ফাঁকা বুলি আওড়াতে চান না নাজমুল হোসেন শান্ত। টাইগার অধিনায়ক এবার মাতামাতি চান না, বিশ্ব আসরে দেখাতে চান চাক্ষুস।
মঙ্গলবার রাজধানীর এক অনুষ্ঠানে বিশ্বকাপে নিজেদের স্বপ্ন, সম্ভাবনা এবং প্রতাশ্যার কথা শোনান টাইগার দলপতি। লম্বা সময়ের কনফারেন্সে সাংবাদিকদের শান্ত বলেছেন, তামিম-মুশফিকের অবসর ভাঙানোর ইস্যুতে, মুস্তাফিজুর রহমান প্রসঙ্গে এবং শুনিয়েছেন টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের আশা ও ঘাটতির কথা। দর্শকদের কাছে বাড়তি প্রত্যাশা না রাখার অনুরোধও রেখেছেন দলনেতা।
মাসদেড়েক পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে বসতে যাওয়া আসরে তবে নিজেদের উজাড় করে দিতে চান শান্ত। প্রত্যাশার চাপের চেয়ে এবার আশাটা বেশি দেখছেন টাইগার কাপ্তান। তবে সেই চাওয়াটা মনে মনে পুষে বড় করে তবেই দেখাতে চান, ‘এবার আশা… প্রতি বছরই দেখি বিশ্বকাপের আগে এগুলো নিয়ে অনেক কথা হয়। প্রত্যাশা, এটা করব, সেটা করব— অনেক কথাবার্তা হয়। একটা রিকুয়েস্ট থাকবে আপনাদের কাছে, বেশি প্রত্যাশা করার দরকার নেই। সবার মনের মধ্যেই থাক সেটি। আপনিও জানেন বাংলাদেশ দল কী চায়, আমরা খেলোয়াড়রাও জানি দলটাকে কতদূর নিয়ে যেতে চাই। সবাই চায় অনেক বড় কিছু করি। কিন্তু এটা নিয়ে যখন বেশি মাতামাতি হয়, ব্যক্তিগতভাবে ভালো লাগে না। কারণ ফল যখন হবে তখন এমনিতেই দেখা যাবে।’
স্বপ্নের ফানুস উড়িয়ে ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলতে গিয়েছিল বাংলাদেশ দল। সেখানে আশানুরূপ ফলের বদলে দেখেছিল ভরাডুবি। আরেকটি বিশ্বকাপে প্রত্যাশা সেভাবে না করলেও শান্তর চাওয়া ম্যাচ ধরে ধরে এগোনো। টাইগার অধিনায়কের বিশ্বাস এবার অন্তত আশাহত করবেন না তারা, ‘আমি একটা জিনিস বলতে পারি, যে দলটা খেলবে তারা ১২০ ভাগ দেবে প্রত্যেকটা ম্যাচে জেতার জন্য। এই নিশ্চয়তা আমি দিতে পারি এবং প্রত্যেকটা ম্যাচ জেতার জন্যই খেলবে। সুতরাং অনেক বেশি আশা নিয়ে যাচ্ছি। প্রতি বছর, প্রত্যেকটা ম্যাচ যখন আমরা খেলি অনেক আশা নিয়েই খেলি এবং আমরা যেটা পারি সেটা করারই চেষ্টা করি। প্রত্যেকটা ম্যাচ জেতার জন্যই খেলব। কিন্তু আগে থেকেই অনেক আশা করছি, এবার একটু বেশি আশা করছি, একটা রিকুয়েস্ট থাকবে আমরা যেন মাতামাতি না করি।’
চলতি বছরের জুনে বসবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসর। ইতোমধ্যে প্রস্তুত হতে শুরু করেছে অংশগ্রহণকারী দলগুলো। বিশ্বকাপের অন্তিম সময়ে দাঁড়িয়ে দলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চান না শান্ত। তবে টাইগার দলনেতা প্রয়োজনে অনেক কিছু করার কথা দিয়েছেন। প্রয়োজনে তামিম কিংবা মুশফিকুরের মতো অভিজ্ঞ কোনো খেলোয়াড়কে ফেরাতেও বদ্ধপরিকর শান্ত। সবার আগে দল হিসেবে খেলার ব্যাপারে মনোযোগী টাইগার অধিনায়ক।
টি-টোয়েন্টিতে ভালো করার ক্ষেত্রে নিজেদের পরিবর্তন, ঘাটতি এবং সম্ভাবনার কথা বলেছেন শান্ত, ‘আমার মনে হয় প্রথমত আমরা দল হিসেবে খেলছি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এবং আমাদের দলে বিশেষজ্ঞ কোনো ক্রিকেটার নেই। যখনই দল হিসেবে খেলি, সবার অবদান যখন থাকে, তখনই আমরা বেশি জিতি। আর ওভারঅল যদি বলি, পেস বিভাগ অনেক উন্নতি করেছে। পাশাপাশি স্পিন ও ব্যাটিংটাও আছে। মূল যে বিষয়টা আমার মনে হয়, দল হিসেবে আমরা যখন খেলি, সবার অবদান যখন থাকে, তখনই আমরা ম্যাচ জিতি।’
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে খুব একটা ভালো অবস্থানে নেই বাংলাদেশ। সবশেষ সিরিজে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচের দুটিতে হেরেছে। তবে বিশ ওভারের মারকাটারি ক্রিকেটে লড়াই দেখিয়েছেন টাইগাররা। সেটিকে পুঁজি করেই এগোতে চান শান্ত। কদিন পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজকে ফেরার মঞ্চ হিসেবে দেখছেন টাইগার কাপ্তান, ‘শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আমরা যে সিরিজটা খেললাম, এই ধরনের উইকেট প্রত্যাশা করছি (জিম্বাবুয়ে সিরিজে)। তারপরও চেষ্টা করব যুক্তরাষ্ট্রে আমরা যখন খেলব, যে ধরনের উইকেটে খেলব, সেই ধরনের উইকেটে খেলা যায় কি না। আমার মনে হয় না, এটা খুব একটা সহজ হবে। তবে ভালো উইকেটই প্রত্যাশা করছি। আর এই সিরিজটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই সিরিজটা যদি আমরা ভালোভাবে শেষ করতে পারি, আত্মবিশ্বাস নিয়ে যেতে পারি তাহলে দলের জন্য অনেক ভালো কিছু হবে।’