প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ২১:০৭ পিএম
আপডেট : ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ১০:১৮ এএম
বিশ্বকাপের ট্রফি হাতে লিওনেল মেসি; ফাইল ছবি
তর্কসাপেক্ষে বিশ্বের সর্বকালের সেরা
ফুটবলার লিওনেল মেসি। সম্ভবত নিজ দেশ আর্জেন্টিনার পর বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ভক্ত এই
মহাতারকার। ২০২২ সালে কাতারে ফুটবল বিশ্বকাপে লা আলবিসেলেস্তেদের জন্য বাংলাদেশের ভক্তদের
উন্মাদনা আন্তর্জাতিক মিডিয়ার শিরোনাম হয়েছিল। যা নজরে এসেছিল খোদ আর্জেন্টিনা ফুটবল
দলেরও। তাই তো বিশ্বকাপ জয়ের পর গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্তিনেজ বাংলাদেশ এসে ঘুরে গেছেন।
সামনে আসছেন আরেক তারকা আঞ্জেল ডি মারিয়াও। তবে এরচেয়েও বড় খবর বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে
বড় তারকা লিওনেল মেসি নাকি আসতে পারেন বাংলাদেশে।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূত
মার্সেলো সি সেসা। এ সময় আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ভারতের ক্রীড়া উদ্যোক্তা
শতদ্রু দত্তও ছিলেন। তিনিই (শতদ্রু) মূলত মেসিকে ঢাকায় আনার বিষয়টি পাপনের সামনে উত্থাপন
করেছেন। সাক্ষাৎ শেষে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের নিজকক্ষে সাংবাদিকদের আটবারের ব্যালন ডি’অর
জয়ী মেসির বাংলাদেশ সফরের আভাস দিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী, ‘তারা বলেছে; যেহেতু অন্যরা
আসছে, মেসিও আসতে পারে। তবে অনেক বিষয় থাকে এখানে।’
এদিকে ঢাকায় মার্টিনেজ-রোনালদিনহোর
আগমনে অনেক বিচ্যুতি ছিল। তবে ডি মারিয়ার সফরে এমনটা হবে না বলে দাবি পাপনের। মন্ত্রীর
ভাষ্যমতে, ‘আগের বিষয় নিয়ে আর মন্তব্য নেই। তবে এখন যেহেতু তারা মন্ত্রণালয়ে এসেছে,
তাই আমরা তাদের প্রস্তাবনা দিতে বলেছি। দেখি তারা কী দেয়; এরপর আমরাও কিছু কন্ডিশন
দিতে পারি, যেহেতু আমাদের সহযোগিতা চেয়েছে। এখানে বাণিজ্যের একটি বিষয় রয়েছে। আর্থিক
বিষয় ছাড়া এ রকম সফর সম্ভব নয়। আগের দুবার যে ভুল-ত্রুটি ছিল, এবার সেটা হবে না।’
এর আগে ২০১১ সালে মেসিসহ পুরো আর্জেন্টিনা দল বাংলাদেশে এসেছিল। সেবার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ খেলেছিল তারা। এরপর বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনাকে গত বছরের ১২-২০ জুন ফিফা উইন্ডোতে বাংলাদেশে আনার চেষ্টা করছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। তবে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের সংস্কারকাজ চলমান থাকায় এ সময় ম্যাচ আয়োজন করা সম্ভব না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত মেসিদের ঢাকায় আসা হয়নি। সেটি প্রথম নয়, এরপরেও অনেকবার আকাশি-নীল শিবিরের ঢাকায় আসার গুঞ্জন উঠেছিল। তবে সেগুলো বাস্তবে রূপ নেয়নি।
এদিকে ২০২২ সালে কাতার ফুটবল বিশ্বকাপে
লিওনেল মেসিদের অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়ে প্রশংসায় ভেসেছেন এ দেশের ফুটবলপ্রেমীরা। সেই উন্মাদনা
থেকে বাংলাদেশে আর্জেন্টিনা দূতাবাস স্থাপন করেছে। কূটনৈতিক সম্পর্কের পাশাপাশি ক্রীড়াক্ষেত্রেও
সম্পর্ক আরও জোরদার করতে চায় দুই দেশ। বাংলাদেশের চাওয়া ফুটবল-হকি, আর্জেন্টিনার ক্রিকেট-কাবাডি।
এ প্রসঙ্গে পাপন বলেন, ‘তারা আমাদের
কাছে ক্রিকেটের সহযোগিতা চেয়েছে। আমি তাদের নিশ্চয়তা দিয়েছি কিউরেটর থেকে শুরু করে
যা প্রয়োজন আমরা দিতে প্রস্তুত। প্রয়োজনে আমাদের ক্রিকেটাররাও সেখানে গিয়ে খেলবে। ক্রিকেটের
পাশাপাশি তারা কাবাডি নিয়েও আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশের জাতীয় খেলায় তারা একবার
অংশ নিয়েছিল। আমরা কাবাডিতেও তাদের সহায়তা করতে পারি।’
বাংলাদেশ ক্রিকেট ও কাবাডিতে সহায়তা
দেওয়ার পাশাপাশি ফুটবল ও হকিতে আর্জেন্টিনার সাহায্যপ্রত্যাশী। বিশেষ করে, ফুটবলে
জোর দিয়েছেন মন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন,‘ ফুটবলে তারা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। অনেক ঐতিহ্য
তাদের। আমরা তাদের কাছ থেকে কোচ নিতে পারি আবার আমাদের ছেলে-মেয়েরা ওখানে গিয়ে প্রশিক্ষণ
নিতে পারে। হকিতে আমাদের সম্ভাবনা রয়েছে আবার তারাও হকিতে বিশ্ব মানের। হকি নিয়ে তাদেরও
আগ্রহ আছে। আমরা তাদের কী দিতে পারি, আবার তারা আমাদের কী দিতে পারে। এ রকম একটা
ডিটেইলস একে অন্যকে দেব। এরপর মূলত কাজ শুরু হবে। ’
আর্জেন্টিনা রাষ্ট্রদূত মারসেলো সি
উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘সমঝোতা স্বাক্ষরের পর এটিই প্রথম আনুষ্ঠানিক সভা। অনেক
বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। অবশ্যই ফুটবল সেখানে প্রাধান্য পেয়েছে। এ ছাড়া আমরা ক্রিকেট
ও হকিতে এগুতে চাই, সেটাও জানিয়েছি।’
এক বছর আগে সমঝোতা স্বাক্ষর হলেও তেমন
কার্যকরী পদক্ষেপ না হওয়ার কারণ সম্পর্কে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আর্জেন্টিনা ও বাংলাদেশ
দুই দিকেই নির্বাচন ছিল। আমরা এখন দুই দেশ ক্রীড়ার মাধ্যমে আরও কাছাকাছি আসতে চাই।’