ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০২২ ০৯:১৫ এএম
আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০২২ ১৯:১০ পিএম
ফাইল ফটো
ফাইনাল ম্যাচে শুরুর ভালোটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাটিং বা বোলিংয়ের শুরুর ধাপে যারা এগিয়ে থাকবে ট্রফির লড়াইয়ে সেই দলই সম্ভাবনা জাগাবে। পাকিস্তান বনাম ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ ফাইনাল নিয়ে মাশরাফি বিন মুর্তজা তার বিশ্লেষণ জানিয়েছেন। প্রতিদিনের বাংলাদেশ-এর পাঠকদের জন্য তার বিস্তারিত এখানে।
‘ইংল্যান্ড এখন দারুন ফর্মে। ২০১৫ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপের ব্যর্থতার পর নিজেদের ভিন্নভাবে আবিষ্কার করেছে। যেকোনো ফরমেটই তারা ফিয়ারলেস খেলে যাচ্ছে। ২০১৯ ওয়ার্ল্ডকাপও জিতেছে, এবারও ফাইনাল খেলছে। এর মাঝে অবিশ্বাস্য কিছু টেস্ট ম্যাচও জিতেছে এভাবেই খেলে। এই ওয়ার্ল্ডকাপে তাদের ব্যাটিংয়ের সাথে বোলিং গ্রুপও ভালো করছে। তবে উডস ফিট না হলে পাকিস্তান অনেকটা স্বস্তিতে থাকবে, কারণ জর্ডান উইকেট পেলেও বেশ খরুচে বোলিং করছে ইদানিং। সেক্ষেত্রে ওকস, আদিল রশিদ, কারানকে বড় ভূমিকা পালন করতে হবে শুরুতে। আর জর্ডান সম্ভবত ডেথ বোলিংটাই সামলাবে।ইংল্যান্ডের ভয় একটা জায়গাতেই,সেটা হলো তাদের মিডল অর্ডার ব্যাটিং এখনো পর্যন্ত এই টুর্নামেন্টে তেমনটা এক্সপোজ হয়নি।’
‘পাকিস্তান শুরুতে বা পাওয়ার প্লেতে যদি একটা- দুটো উইকেট নিতে পারে, তাহলে ইংল্যান্ডের বিপদ আছে। সল্ট সেমিফাইনাল খেললেও ব্যাটিং পায়নি। ব্রুকস অনেকটা অফ ফর্মে, তাই পুরো চাপ সামলাতে বা বড় রান করতে মঈন আলী বা লিভিংস্টনকে দায়িত্ব নিতে হবে। ওরা দুইজনই পজিটিভ ক্রিকেট খেলবে আর সেটাই কাল হতে পারে। তবে হেলস বা বাটলার ছয় ওভার ব্যাটিং করে ফেললে খেলা পাকিস্তানের হাত থেকে অনেকটা নিয়ে যাবে। আর ওদের একজন আউট হলেও ইংল্যান্ড প্রেশারে থাকবে।’
মাশরাফি বলেন, ‘পাকিস্তানের বিষয়টা পুরো ভিন্ন, যখন ওরা খুব ফর্মে থাকে বা এক্সপেক্টেশন থাকে তখন ওরা খুব ভালো করে না। কিন্তু যদি নির্ভার থাকে তাহলে ওদের মতো ভয়ানক টিম খুব কম আছে। কারণ আনপ্রেডিকটেবলিটি ওদের সবচেয়ে বড় শক্তি। পাকিস্তানের পেস বোলিং অ্যাটাক নিয়ে সবাই জানে, বিশেষ করে শাহিন তো প্রথম ওভারে উইকেট নেওয়ার রেকর্ড গড়ে বসে আছে। অন্যরাও দারুণ করছে। তবে ফাইনালে স্পিন অ্যাটাক শাদাব এবং নওয়াজ ইংল্যান্ডের জন্য চ্যালেঞ্জ হতে পারে। কারণ যেকোনো গিভেন ডে তে দুইজনই দারুণ।’
তিনি আরও বলেন, ‘পাকিস্তানের ব্যাটিং কেমন করে সেটাই দেখার বিষয়, ওপেনাররা রান করলেও এক ম্যাচ দিয়েই ফর্মে ফিরেছে বলাটা মুশকিল তবে যে কোন একজন উইকেটে দাঁড়িয়ে থাকলে ইংল্যান্ডের জন্য সমস্যা হতে পারে। হ্যারিস যদি কিছু সময় ব্যাটিং করতে পারে তাহলে সিরিয়াস ড্যামেজ করতে পারে। মিডল অর্ডার ব্যাটিংই পাকিস্তানকে এ পর্যন্ত নিয়ে এসেছে। আর একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, এমসিজি কিন্তু পাকিস্তানের জন্য হান্টিং গ্রাউন্ড এবং সেটা তারা খুব ভালো করেই জানে। সব মিলিয়ে তারা ইংল্যান্ড এর জন্য বিশাল চ্যালেন্জ নিয়েই আসবে মনে হয়।’
‘ইংল্যান্ড ক্যাপ্টেন জস বাটলার, সেমি ফাইনালে জেতার পর একটা কথা বলেছেন যে এভাবে ডমিনেট করে জিতলে ফাইনালে সাধারণত সমস্যা হয়। ইনিস্টিং থেকে বলেছে হয়তো, আর ইনিস্টিং কিন্তু খুব খারাপ জিনিস, যদি মনে ভালোটা আসে ভালো আর খারাপটা আসলে সেটা মাথায় থেকেই যায়। ফিয়ারলেস ক্রিকেট খেলায়ও কিছুটা রিস্ক থাকে যেটা ঐ বিশেষ দিনে ঘটে গেলে বিপদ। পাকিস্তান শুরুতে সেরকম সুযোগ পেয়ে গেলে ইংল্যান্ড বিপদে পড়ে যেতে পারে। যাই হোক, ২০১৯ এর মতো আরও একটি দারুণ ফাইনালে অপেক্ষায় আছি। দুই দেশের সমর্থকরা চাপে থাকবে আর আমরা আশা করছি একটা উপভোগ্য ম্যাচ হোক ।’
পাকিস্তান আছে, ১৯৯২ ফিরিয়ে আনার আশায় যেখানে প্রতিপক্ষ ছিল এই ইংল্যান্ড আর মাঠটা ছিল কিন্তু এই এমসিজিই।
দেখা যাক কে জিতে।