প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৯ মে ২০২৩ ১৫:৫২ পিএম
আপডেট : ০৯ মে ২০২৩ ১৮:২৫ পিএম
বিটকয়েনের এই সাম্প্রতিক উত্থান-পতনের বিষয়ে বেশ কিছু কারণের কথা উল্লেখ করেছে ব্যবসাবিষয়ক পত্রিকা ফোর্বস। ছবি : সংগৃহীত
গত বছরের রেকর্ড মূল্যপতনের অবস্থা কাটিয়ে চলতি বছরের শুরু থেকে চাঙা
ছিল ক্রিপ্টোকারেন্সির দর। এ সময় আবারও ৩০ হাজার ডলার ছাড়িয়ে যায় ক্রিপ্টো তালিকায়
১ নম্বরে থাকা বিটকয়েনের, ২ হাজার ডলার ছাড়ায় ইথারিয়ামের দাম। সব ক্রিপ্টোকারেন্সির
একত্রিত মার্কেট ক্যাপিং ছাড়িয়ে যায় ১ হাজার ২০০ কোটি ডলার।
কিন্তু সম্প্রতি দুই ধাপে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিপ্টোকারেন্সি বিনিময়
প্ল্যাটফর্ম বাইন্যান্স বিটকয়েন উত্তোলন সাময়িক বন্ধ করলে শঙ্কা ছড়িয়ে পড়ে ক্রিপ্টো
দুনিয়ায়। অনেকেই অন্যান্য বিনিময় প্ল্যাটফর্মে তাদের মুদ্রা সরিয়ে নিতে হুমড়ি খেয়ে
পড়েন। যদিও দুবারই বাইন্যান্স টুইটবার্তায় আশ্বস্ত করেছে, তাদের দল বিটকয়েন উত্তোলন
যত তাড়াতাড়ি সম্ভব খুলে দেবে। তবে এফটিএক্সের ভয় যেন এখনও যায়নি। গত বছর এফটিএক্সের
পতনে অনেকের অর্থই আটকা পড়েছে। এই অর্থ ফেরত পাওয়ার বিষয়টিও এখনও নিশ্চিত নয়।
বাইন্যান্স তার প্ল্যাটফর্মে বিটকয়েন উত্তোলন চালু করলেও এর মধ্যেই
ক্রিপ্টোমার্কেটে তার ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। কয়েন মার্কেট ক্যাপের তথ্যমতে, বিটকয়েনের
দাম গত কয়েক দিনে কমছেই। এরই মধ্যে তা ২৭ হাজার ডলারে নেমে এসেছে। এরই মধ্যে ইথারিয়ামের
দাম কমে হয়েছে ১ হাজার ৮৪২ ডলার। পাশাপাশি অন্যান্য মুদ্রাতেও এর প্রভাব পড়েছে।
ইনভেস্টিং.কমের তালিকায় ৪ নম্বরে থাকা বিএনবির দামও কমেছে। একসময়
ইলন মাস্কের সমর্থনে থাকা ডজকয়েনের দামও কমে ৭ সেন্টের কাছে এসে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি
সোলানা ২৫ ডলার স্পর্শ করলেও বর্তমানে এর দাম ২০ ডলারের কিছুটা বেশি।
এ ছাড়া চলতি মাসেই বেশ কিছু টোকেনের বড় ধরনের উত্থান দেখা গেলেও এর
পতনও হয়েছে দ্রুত। বিশেষ করে বাইন্যান্স.ইউএসে লিস্টিং হওয়ার আগে দ্রুত দাম বাড়তে থাকে
ফ্লকির। এমনকি যখন বাইন্যান্স গ্লোবাল এক টুইটবার্তায় ঘোষণা করে যে তারা ফ্লোকি টোকেন
ও পেপে টোকেন লিস্টিং-এর ঘোষণা দিলে পেপের দর বৃদ্ধি ১০০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায় এবং টোকেনটি
ক্রিপ্টোকারেন্সি লিস্টে ৫০-এর মধ্যে জায়গা করে নেয়। ফ্লোকি টোকেনের দাম বৃদ্ধি পায়
৮০ শতাংশ এবং তালিকায় ১০০-এর ভেতরে চলে আসে। বর্তমানে শীর্ষ ৫০-এর তালিকা থেকে বেরিয়ে
গেছে পেপে ও শীর্ষ ১০০-এর তালিকা থেকে বেরিয়ে গেছে ফ্লোকি।
তবে বিটকয়েনের এই সাম্প্রতিক উত্থান-পতনের বিষয়ে বেশ কিছু কারণের
কথা উল্লেখ করেছে ব্যবসাবিষয়ক পত্রিকা ফোর্বস। যুক্তরাষ্ট্রের অস্থির ব্যাংকিং ব্যবস্থা,
রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব, উন্নত দেশে মুদ্রাস্ফীতির শঙ্কা, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে
সুদের হার বৃদ্ধির কারণে সৃষ্ট অনিশ্চয়তা, কঠোর নিয়ন্ত্রণের কারণে বিট্রেক্সের মতো
প্রধান ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ বন্ধ হওয়া, অন্যতম বড় ক্রিপ্টোকারেন্সি বিনিময় প্ল্যাটফর্ম
এফটিএক্সের পতন। ক্রিপ্টো বিনিয়োগের কিছু পরামর্শও দেওয়া হয়েছে ফোর্বসের
প্রতিবেদনে। সেটি হলো, আপনার জীবনের সব সঞ্চয় ক্রিপ্টোতে বিনিয়োগ করবেন না। ততটুকু
অর্থই বিনিয়োগ করবেন, যেটুকু হারালে আপনার খুব একটা ক্ষতি হবে না। অন্যান্য সম্পদের
মতো। ক্রিপ্টোকারেন্সিতে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচনা করুন। সর্বোচ্চ আয়ের জন্য
বিটকয়েন কেনা ও বিক্রি করার আগে ভালোভাবে গবেষণা করুন।
আর বিশেষ করে, ক্রিপ্টোকারেন্সি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যে বিষয় মাথায়
রাখা উচিত, আপনি যেই দেশে অবস্থান করছেন সেই দেশের আইনে ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ লেনদেন বৈধ কি না। এই বিষয় নিশ্চিত হওয়া জরুরি।
সূত্র : এক্সপ্রেস ট্রিবিউন/ফোর্বস