× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যে কেন এত দুর্ঘটনা

রিকোর্স চাকমা, রাঙামাটি

প্রকাশ : ২৫ মার্চ ২০২৩ ২০:৫৭ পিএম

আপডেট : ২৫ মার্চ ২০২৩ ২১:০২ পিএম

প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যে কেন এত দুর্ঘটনা

দেশের অন্যতম সুন্দর দর্শনীয় স্থান সাজেক ভ্যালি। চারপাশে সবুজের সমারোহ। উঁচু-নিচু পাহাড়ে মেঘের সারি। অনেকে একে বলেন বাংলাদেশের ভূস্বর্গ। প্রকৃতির এই অপার সৌন্দর্যের সড়কে বারবার ঘটছে দুর্ঘটনা। প্রাণ হারাচ্ছেন স্থানীয়দের পাশাপাশি পর্যটকরা। সবশেষ ৩ মার্চ থেকে ১৩ মার্চের মধ্যে দুটি দুর্ঘটনা ঘটে। এতে নিহত হন দুইজন। আহত হন অন্তত ২০ জন।

রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে অবস্থিত সাজেকের আয়তন ৭০২ বর্গমাইল। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা ১ হাজার ৮০০ ফুট। এর উত্তরে ভারতের ত্রিপুরা, রাঙামাটির লংগদু, পূর্বে ভারতের মিজেরাম, পশ্চিমে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা।

জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, রাঙামাটিতে অবস্থিত হলেও খাগড়াছড়ি জেলা হয়ে এটির একমাত্র যাতায়াত ব্যবস্থা সাজেক সড়ক। জেলা সদর থেকে দূরত্ব ৭০ কিলোমিটার। এই সড়ক বেশ সরু। মাত্র ৫ দশমিক ৫ ফুট প্রশস্ত। প্রতিদিন প্রায় ৫০০ চান্দের গাড়ি (জিপ) ও পিকআপভ্যান, ২০০ মাহিন্দ্রা, ১৫০ সিএনজিচালিত অটোরিকশা এবং অনেক মোটরসাইকেল আসা-যাওয়া করে এই সড়ক দিয়ে। প্রতি মাসে এখানে ৪-৫ বার দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রশাসন জানায়, সাজেক সড়কে দুর্ঘটনার মূলে রয়েছে পর্যটকদের নিজস্ব পরিবহন নিয়ে ভ্রমণ বৃদ্ধি। সড়কটি সম্পর্কে ধারণা না থাকা। ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল। চালকের অদক্ষতা। আঁকাবাঁকা সড়কে বেপরোয়া গতি।


সাজেক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল আলম বলেন, ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল, আঁকাবাঁকা রাস্তায় গাড়ি চালানোর সঠিক ধারণা না থাকা ও চালকের বেপরোয়া গতি দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। তিনি বলেন, দুর্ঘটনা রোধে জেলা প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে ৩-৪ মাস আগে বৈঠক করেছি। কিছু নিয়ম চালু করেছি আমরা।

সাজেক থানা সূত্রে জানা যায়, সাজেক সড়কে অন্যান্য বছরের তুলনায় ২০২২ সালে ৩০ বারের বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে। নিহত হয়েছেন পাঁচজন। তবে এই সংখ্যা আরও বেশি বলে স্থানীয়দের দাবি।

সড়ক নির্মাণের সঙ্গে জড়িত স্থানীয় কয়েকজন প্রকৌশলী জানান, দুই কিলোমিটার খাড়া সড়কে রুইলুই পার হওয়ার পর বেশিরভাগ দুর্ঘটনা ঘটে। বাইরের বেশিরভাগ মোটরসাইকেল চালকের এই আঁকাবাঁকা রাস্তা সম্পর্কে ধারণা নেই। সরু রাস্তায় তারা অন্যান্য গাড়ি অতিক্রম করতে গিয়ে বেশি দুর্ঘটনার শিকার হন। তা ছাড়া খাড়া পাহড়ে উঠার সময় অনেকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন।

বাঘাইহাট এলাকার বাসিন্দা জ্ঞান জ্যোতি চাকমা বলেন, এখানে বেশি দুর্ঘটনার শিকার চান্দের গাড়ি ও মোটরসাইকেল। স্থানীয় বেশিরভাগ চালক অপেশাদার। অনেক সময় আমরা দেখি, চালকের আসনে সহকারী। সবচেয়ে বড় সমস্যা কিশোর ও যুবকদের বেপরোরা গতিতে গাড়ি চালানো। এজন্য ট্রাফিক পুলিশের ব্যবস্থা করলে দুর্ঘটনা অনেক কমে আসবে।

সাজেক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অতুলাল চাকমা বলেন, সাজেকে পর্যটনকেন্দ্র চালু হওয়ার পর থেকে দুর্ঘটনা বেড়েছে। এখানকার প্রায় সব রাস্তায় দুর্ঘটনা ঘটে। সাজেক সড়কটি আরও প্রশস্ত করা প্রয়োজন। তাহলে দুর্ঘটনা অনেকটা কমে আসবে। আশা করছি প্রশাসন এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেবে।

সাজেক জিপ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক পরিমল দেবনাথ বলেন, আগের চেয়ে সাজেক সড়কে দুর্ঘটনা অনেক বেড়েছে। প্রথমত, রাস্তাটি সরু ও এক লেনের। দ্বিতীয়ত, এটি আঁকাবাঁকা। তা ছাড়া রাস্তা লাগোয়া অনেক গাছ। ফলে কোনো গাড়ি একটু এদিক-সেদিক হলেই দুর্ঘটার শিকার হয়।

রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, সাজেক ভ্যালি রাঙামাটি জেলায় অবস্থিত হলেও এর একমাত্র যাতায়াত ব্যবসস্থা খাগড়াছড়ি হয়ে। দুর্ঘটনা রোধে বাঘাইছড়ি উপজেলা থেকে প্রশাসনকে মনিটরিং করতে হয়। যেটা দূরত্বের কারণে সব সময় সম্ভব হয়ে ওঠে না। তবে দুর্ঘটনা যেন কমিয়ে আনা যায় সেজন্য আমরা ইতোমধ্যে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা