× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

দুই শিক্ষার্থীর ভার্চুয়াল উদ্যোগ

ঘরে বসেই আইনি সেবা

ফারহাত মাইশা অর্পা

প্রকাশ : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৩:৪৭ পিএম

আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৪:২৩ পিএম

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া দুই শিক্ষার্থী মালিহা রাহাম ও মুইয শাহাব উদ্দিনের ভিন্নধর্মী উদ্যোগ লিগ্যাল এক্স

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া দুই শিক্ষার্থী মালিহা রাহাম ও মুইয শাহাব উদ্দিনের ভিন্নধর্মী উদ্যোগ লিগ্যাল এক্স

মালিহা রাহাম ও মুইয শাহাব উদ্দিনের পরিচালিত অনলাইনে সাশ্রয়ী মূল্যে আইনি সহায়তা দেওয়ার সংস্থা ‘লিগ্যাল এক্স’। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া তরুণ দুই শিক্ষার্থীর ভিন্নধর্মী উদ্যোগ ইতোমধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে। বিস্তারিত জানিয়েছেন ফারহাত মাইশা অর্পা

মানিক (ছদ্মনাম) ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠানে গাড়িচালক হিসেবে বেশ কয়েক বছর ধরে কাজ করছিলেন। মালিকপক্ষের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদের ভিত্তিতে চাকরি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল মানিকসহ আরও ১১ জন কর্মীকে। মানিক ও তার সহকর্মীরা চাকরিচুক্তির মেয়াদ দীর্ঘায়িত করতে চাইলেও মালিকপক্ষ এমন মানবিক আবেদনে সাড়া দেয়নি। পরে মানিক ও তার সহকর্মীরা আইনি পরামর্শের জন্য আইনজীবী ও অন্যদের শরণাপন্ন হলে মেলেনি সহায়তা, বরং পোহাতে হয়েছিল সীমাহীন দুর্ভোগ। এরপরই তারা জানতে পারেন আইনি সেবা প্রদানকারী সংস্থা লিগ্যাল এক্স সম্পর্কে। অনলাইনে যোগাযোগ করে তাদের সমস্যার কথা শেয়ার করে পেয়েছিলেন আইনি সেবা, যার ভিত্তিতে পুনরায় ১২ জন কর্মী তাদের চাকরি ফিরে পেতে সক্ষম হয়েছিলেন। এভাবেই প্রয়োজন অনুযায়ী আইনি সেবা প্রদান করে সমাজের বিভিন্ন মানুষের উপকারে আসছে লিগ্যাল এক্স।

তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে মানুষের হাতের নাগালে চলে এসেছে গোটা পৃথিবী। সব ধরনের জনকল্যাণমূলক সেবা এখন পৌঁছে গেছে মানুষের দ্বারপ্রান্তে। এখন যদি পাওয়া যায় ঘরে বসে বিনামূল্যে আইনি সেবা, তবে কেমন হয়? এ ধারণা মাথায় রেখে ২০১৮ সালে যাত্রা করে মালিহা রাহাম ও মুইয শাহাব উদ্দিনের ‘লিগ্যাল এক্স’। দুই শিক্ষার্থীর ভিন্নধর্মী উদ্যোগ ইতোমধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে। তাই তো লিগ্যাল এক্সের অর্জনের ঝুড়িতে রয়েছে দুটি বেসিস আইসিটি ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড। ২০২০ ও ২০২২ সালে এ সংস্থাটি পেয়েছিল সম্মাননা পুরস্কার। সেই থেকে এগিয়ে চলা। শুরুর দিকে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হলেও তা ছাপিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যেতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ তারা। 

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী থাকাকালে কাজ শুরু করেছিলেন লিগ্যাল এক্সের দুজন উদ্যোক্তা। অনলাইনে আইনি সেবা প্রদানের আইডিয়া কীভাবে এসেছিল- এ প্রশ্নের উত্তরে মালিহা রাহাম বলেন, ‘আইন বিভাগের শিক্ষার্থী হওয়ার সুবাদে আমাদের শিক্ষক বা আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে যেকোনো আইনি প্রয়োজনে পরামর্শ নেওয়া খুবই সহজ ছিল। কিন্তু যারা সাধারণ মানুষ বা যাদের পরিবারে আইনজীবী নেই, তাদের বেশ বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে সঠিক আইনি পরামর্শ না পাওয়ায় বদলে যায় মানুষের জীবন। সেই ভাবনা থেকেই দেশের সুবিধাবঞ্চিত নাগরিক থেকে শুরু করে যেকোনো শ্রেণির মানুষকে সহজে আইনি সেবা দিতে আমরা কাজ শুরু করি।’ তবে লিগ্যাল এক্সের পথচলা মোটেই সুগম ছিল না। পরিবার থেকে বন্ধুমহল সব জায়গায় বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে তাদের। এ প্রসঙ্গে মালিহা রাহাম বলেন, ‘আমরা যখন আমাদের আইডিয়া শেয়ার করেছিলাম কাছের মানুষের সঙ্গে, তারা বলেছিল পড়াশোনায় মনোযোগী হতে। কিন্তু আমি ও শাহাব কখনও আশাহত হইনি। আমাদের বিশ্বাস ছিল ভালো কিছু করা অবশ্যই সম্ভব এবং আমরা তা পেরেছি। এখন পরিবার ও বন্ধুরা আমাদের নিয়ে গর্ববোধ ও সাপোর্ট করে।’

মালিহা রাহাম আরও জানান, ‘এখন ঘরে বসে কোনো প্রকার ঝামেলা ছাড়াই সহজে আইনি সেবা পেতে পারবে যে-কেউ; তা-ও আবার সাশ্রয়ী মূল্যে।’

কার্যক্রম সম্পর্কে মালিহা বলেন, ‘লিগ্যাল এক্সের পথচলা হয়েছিল দুজনকে নিয়ে। বর্তমানে কাজ করছেন ২০ জন কর্মী। যখন কোনো ব্যক্তি নিজের আইনি জটিলতার বিষয়টি শেয়ার করেন, আমরা তৎক্ষণাৎ চেষ্টা করি পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করার। এখন পর্যন্ত অনলাইনের মাধ্যমে লিগ্যাল এক্স ৮ হাজার আইনি জিজ্ঞাসাসংক্রান্ত পরামর্শ প্রদান করেছে। এ ছাড়া সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠী, তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী ও ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠীদের নিয়ে আমরা কাজ করছি তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করতে।’ তিনি আরও বলেন, ‘মানুষকে নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করতে ও সঠিক আইনি পরামর্শ দিতে লিগ্যাল এক্স কাজ করে যাবে সামনের দিনগুলোয়ও।’

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে মালিহা রাহাম বলেন, ‘দেশের ৬৪ জেলায় লিগ্যাল এক্স আইনি সেবা পৌঁছে দেবে- এটাই আমাদের লক্ষ্য। এমনকি যাদের হাতে স্মার্ট ডিভাইস নেই, তারাও যাতে আইনি সেবা গ্রহণ করতে পারেন সেজন্য দেশের ৬৪ জেলায় আইনি সেবা ক্লিনিক স্থাপন করতে চাই।’

লিগ্যাল এক্সের অর্জনের ঝুড়িতে রয়েছে দুটি বেসিস আইসিটি ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড

ডিজিটাল আইনি সেবা প্রতিষ্ঠান লিগ্যাল এক্সের উদ্যোক্তা মালিহা রাহাম আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন লন্ডন কলেজ অব লিগ্যাল স্টাডিজ (সাউথ) থেকে আর মুইয শাহাব উদ্দিন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। বর্তমানে তারা কাজ করছেন লিগ্যাল এক্স নিয়ে। বিনামূল্যে ঘরে বসে আইনি সেবা পেতে যোগাযোগ করা যাবে লিগ্যাল এক্সের ফেসবুক পেজের ঠিকানায়। এ ছাড়া লিগ্যাল এক্সের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যোগাযোগ করে আইনি জটিলতা শেয়ার করলেই পাওয়া যাবে সাশ্রয়ী মূল্যের আইনি সেবা খুব সহজে।

ব্যবসায়িক উদ্যোগে আইনি সেবা

তরুণ উদ্যোক্তারা নতুন কোনো উদ্যোগ নিয়ে কাজ শুরুর পর নানা আইনি প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হন। এক্ষেত্রে লিগ্যাল এক্স দিচ্ছে উদ্যোক্তাদের আইনি পরামর্শ। এ নিয়ে তরুণ উদ্যোক্তারা তাদের উদ্যোগ সম্পর্কিত আইনি সেবা গ্রহণ করে সামনের দিকে অগ্রসর হতে পারবেন। যেকোনো ধরনের প্রতারণার হাত থেকে মুক্তি পেতে লিগ্যাল এক্স প্রদান করবে আইনি সেবা। ঘরে বসে তরুণ উদ্যোক্তারা জানতে পারবেন এসব তথ্য খুব সহজেই সাশ্রয়ী মূল্যে

ডিজিটাল নিরাপত্তায় আইনি সেবা

ইন্টারনেটে মানুষের অবাধ বিচরণ হওয়ায় প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে সাইবার হ্যারাজমেন্ট। ভুক্তভোগীদের বেশিরভাগই শিক্ষার্থী।  সাইবার বুলিং সংক্রান্ত যেকোনো আইনি পরামর্শের জন্য লিগ্যাল এক্স টিমের সঙ্গে যোগাযোগ করলে পাওয়া যাবে আইনি সেবা। অভিজ্ঞ আইনজীবীরা আইনি পরামর্শ দেওয়ার মাধ্যমে সাহায্য করার চেষ্টা করেন ভুক্তভোগীদের। এক্ষেত্রে ভুক্তভোগীদের পরিচয়ের গোপনীয়তা সম্পর্কে বেশ সচেতন থাকে লিগ্যাল এক্স



শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: protidinerbangladesh.pb@gmail.com

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: pbad2022@gmail.com

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: pbonlinead@gmail.com

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: pbcirculation@gmail.com

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা